গর্ভবতী মায়েদের জন্য ভয়ঙ্কর! গাঁজা সেবনে শিশুর মারাত্মক ক্ষতি

গর্ভাবস্থায় মাদক সেবন: শিশুদের স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে নতুন গবেষণা

মাতৃত্বকালীন সময়ে মাদক সেবনের কুফল সম্পর্কে নতুন একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভাবস্থায় গাঁজা সেবন করলে তা শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

সময়ের আগে জন্ম, কম ওজনের শিশু জন্ম নেওয়া এবং এমনকি জন্মের পরপরই শিশুর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে এই কারণে।

গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন ওরেগন হেলথ অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটির গবেষক ড. জেমি লো। তার মতে, “গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভবতী মায়েদের গাঁজা সেবনের কারণে অপরিণত শিশুর জন্ম হওয়ার ঝুঁকি ৫২ শতাংশ এবং কম ওজনের শিশু জন্মের ঝুঁকি ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়।

এছাড়াও, জন্মের পরপরই শিশুর মৃত্যুর ঝুঁকি ২৯ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।”

গবেষকরা বলছেন, গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীর এবং শিশুর মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো প্ল্যাসেন্টা বা গর্ভফুল। মায়ের শরীর থেকে অক্সিজেন, পুষ্টি এবং হরমোন শিশুর কাছে পৌঁছে দেয় এই অঙ্গটি।

কিন্তু মাদক সেবনের কারণে প্ল্যাসেন্টার কার্যকারিতা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, যা মা ও শিশু উভয়ের জন্যই ঝুঁকিপূর্ণ।

বর্তমানে অনেক দেশে গাঁজা সেবনের প্রবণতা বাড়ছে, যার ফলে অনেক নারী গর্ভাবস্থায়ও এটি ব্যবহার করছেন। গবেষকদের মতে, “অনেকের মধ্যে এমন একটি ভুল ধারণা রয়েছে যে, যেহেতু গাঁজা একটি প্রাকৃতিক উপাদান, তাই এটি ক্ষতিকর নয়।

তবে মনে রাখতে হবে, আফিম ও হেরোইনও গাছের উপাদান।”

গবেষণায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, গর্ভাবস্থায় অ্যালকোহল সেবনের কারণে যেমন ভ্রূণের অ্যালকোহল সিন্ড্রোম হতে পারে, তেমনি ধূমপানের কারণে শিশুর ফুসফুস ও মস্তিষ্কের বিকাশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

মাদক সেবনের এই প্রভাবগুলো মারাত্মক হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গর্ভাবস্থায় মাদক সেবনের বিষয়ে জনসচেতনতা খুবই জরুরি। মায়েরা যাতে সঠিক তথ্য পান এবং স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করতে পারেন, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

চিকিৎসকদেরও এ বিষয়ে রোগীদের সচেতন করতে হবে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গর্ভাবস্থায় মাদক সেবনের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে নিয়মিত গবেষণা প্রয়োজন। মায়ের স্বাস্থ্য ও শিশুর সুস্থ ভবিষ্যতের জন্য গর্ভাবস্থায় মাদক সেবনের বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরি।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *