মা হওয়ার আগে মস্তিষ্কে কী ঘটে? শুনলে চমকে যাবেন!

গর্ভবতী মহিলাদের মস্তিষ্কে ঘটে যাওয়া পরিবর্তন: নতুন গবেষণা মায়েদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে এলো

মা হওয়ার সময় একজন নারীর শরীরে অনেক পরিবর্তন আসে, শারীরিক পরিবর্তনের পাশাপাশি মস্তিষ্কেরও ঘটে বিশাল পরিবর্তন। সম্প্রতি, বিজ্ঞানীরা এই পরিবর্তনের কারণ এবং তাৎপর্য নিয়ে নতুন কিছু তথ্য আবিষ্কার করেছেন।

পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কগনিটিভ নিউরোসায়েন্টিস্ট ড. লরা প্রিটশেটের নেতৃত্বে পরিচালিত একটি গবেষণায়, গর্ভাবস্থায় মস্তিষ্কের গঠন ও কার্যকারিতায় আসা পরিবর্তনগুলো বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভাবস্থায় মহিলাদের মস্তিষ্কের ধূসর পদার্থ (gray matter)-এর ঘনত্ব কমে যায়, কিন্তু শ্বেত পদার্থের (white matter) গঠন আরো শক্তিশালী হয়।

মস্তিষ্কের ভেন্ট্রিকলগুলোর আকারও পরিবর্তিত হয়। এই পরিবর্তনগুলো মূলত হরমোনের কারণে ঘটে থাকে, বিশেষ করে ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরনের পরিবর্তনের ফলে এমনটা হয়।

গবেষণার জন্য, গবেষকরা গর্ভধারণের আগে থেকে শুরু করে সন্তান জন্মদানের দুই বছর পর পর্যন্ত একজন নারীর মস্তিষ্কের পরিবর্তনগুলো পর্যবেক্ষণ করেন।

তারা এমআরআই স্ক্যান এবং রক্তের নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে এই পরিবর্তনগুলো চিহ্নিত করেন। তাদের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, মস্তিষ্কের পরিবর্তনগুলো সন্তান জন্মদানের সময় সবচেয়ে বেশি হয়, তবে ধীরে ধীরে কিছু পুনরুদ্ধার হতে দেখা যায়।

ড. প্রিটশেট ব্যাখ্যা করেন, “মস্তিষ্কের এই পরিবর্তনগুলো আসলে কোনো খারাপ কিছু নয়। বরং, এগুলো মস্তিষ্কের নতুনভাবে নিজেকে তৈরি করার একটি প্রক্রিয়া, যা মা হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয়।”

তিনি আরও যোগ করেন, “এটি মস্তিষ্কের সার্কিটগুলোর সূক্ষ্মভাবে বিন্যাস ঘটায়, যা একজন মাকে নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতে এবং সন্তানের প্রতি যত্নশীল হতে সাহায্য করে।”

এই গবেষণার ফলাফল আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এটি প্রসবোত্তর বিষণ্ণতা (postpartum depression) সহ অন্যান্য মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা, মাথাব্যথা, এবং প্যারেন্টাল বিহেভিয়ার (parental behaviour) সম্পর্কে নতুন ধারণা দিতে পারে।

বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এই গবেষণা ভবিষ্যতে মস্তিষ্কের গঠন ও মানুষের আচরণ সম্পর্কিত আরও অনেক অজানা বিষয় উন্মোচন করতে সাহায্য করবে।

গর্ভাবস্থায় মস্তিষ্কের এই পরিবর্তনগুলো বোঝা মা ও শিশুদের সুস্থ জীবনের জন্য অত্যন্ত জরুরি। তাই, নতুন মায়েদের জন্য এই গবেষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করে।

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *