শেষটা এমন হবে কে জানত! ম্যাচ অফ দ্য ডে থেকে লিনেকারের অশ্রুসজল বিদায়!

গ্যারি লিনেকার: ‘ম্যাচ অফ দ্য ডে’ থেকে বিদায়, ২৬ বছরের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের সমাপ্তি।

দীর্ঘ ২৬ বছর ধরে বিবিসি’র জনপ্রিয় ফুটবল বিষয়ক অনুষ্ঠান ‘ম্যাচ অফ দ্য ডে’ উপস্থাপনার পর বিদায় নিলেন কিংবদন্তী ক্রীড়া ভাষ্যকার গ্যারি লিনেকার। ব্রিটেনের ক্রীড়া জগতে তাঁর অবদান অবিস্মরণীয়। গত কয়েক দশক ধরে তিনি ছিলেন ফুটবল প্রেমীদের অত্যন্ত পরিচিত এক মুখ। খেলাপ্রেমীদের কাছে তাঁর বিদায় তাই এক বেদনার মুহূর্ত।

উপস্থাপক হিসেবে লিনেকারের যাত্রা শুরু হয় ১৯৯৯ সালের ৭ই আগস্ট। শুরুতে তিনি ছিলেন একজন বিশেষজ্ঞ। এরপর ডেভিড কোলম্যান এবং ডেস লিনামের মতো কিংবদন্তিদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে উপস্থাপনার দায়িত্ব নেন। তাঁর সাবলীল উপস্থাপনা এবং খেলার প্রতি গভীর ভালোবাসাই তাঁকে এই উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে।

নিজের সময়ে তিনি শুধু অনুষ্ঠানটি উপস্থাপন করেননি, বরং দর্শকদের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন। তাঁর উপস্থাপনার ধরন ছিল আকর্ষণীয়, যা দর্শকদের মধ্যে খেলাটির প্রতি আগ্রহ আরও বাড়িয়ে তোলে।

লিনেকারের উপস্থাপনার ধরন ছিল খুবই স্বকীয়। খেলার প্রতি তাঁর আবেগ এবং খেলোয়াড়দের প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ দর্শকদের মন জয় করে নেয়। তিনি প্রায়ই খেলার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মজাদার মন্তব্য করতেন, যা দর্শকদের হাসাতো। খেলোয়াড় জীবনের অর্জনগুলো নিয়েও তিনি কৌতুক করতেন, যা তাঁর ব্যক্তিত্বকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছিল।

২০১৫ সালে লিসেস্টার সিটি প্রিমিয়ার লিগ জিতলে তিনি আন্ডারওয়্যার পরে অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করার প্রতিশ্রুতি দেন। সেই সময়ে বিষয়টি বেশ আলোচিত হয়েছিল। খেলোয়াড় হিসেবে তিনি কখনো হলুদ কার্ড পাননি। উপস্থাপক হিসেবেও ছিলেন সবসময় নিরপেক্ষ ও হাস্যরসিক।

তবে, লিনেকারের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কিছু মন্তব্য বিতর্কের জন্ম দেয়। শরণার্থীদের প্রতি সমর্থন জানানোয় অনেকে তাঁর সমালোচনা করেন। সম্প্রতি গাজা সংঘাত নিয়ে একটি পোস্টে আপত্তিকর প্রতীক ব্যবহারের কারণে তাঁর বিদায় আরও দ্রুত হয়।

বিদায় বেলায় লিনেকার বলেন, “এভাবে শেষ হবে, তা ভাবিনি।” তাঁর শেষ অনুষ্ঠানে সহকর্মী অ্যালান শিয়ারার এবং মিকা রিচার্ডস-এর সঙ্গে কথোপকথন দর্শকদের মনে গেঁথে থাকবে।

গ্যারি লিনেকারের এই বিদায় শুধু একটি অনুষ্ঠানের নয়, বরং একটি যুগের সমাপ্তি। তাঁর উপস্থাপনা শৈলী, খেলার প্রতি ভালোবাসা এবং দর্শকদের সঙ্গে তাঁর আন্তরিক সম্পর্ক সবসময় স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ফুটবল বিশ্বে তাঁর অবদান চিরকাল অম্লান থাকবে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *