গাজায় মানবিক সহায়তা বাড়াতে ইসরায়েলের সঙ্গে নতুন চুক্তির খসড়া তৈরি করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। মঙ্গলবার ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ইইউর শীর্ষ কূটনীতিকরা এই বিষয়ে আলোচনা করেছেন। খবরটি জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান, কায়া কাল্লাসের ভাষ্যমতে, ইসরায়েলের সঙ্গে একটি সাধারণ বোঝাপড়ায় পৌঁছেছে ইইউ। এই চুক্তির মূল উদ্দেশ্য হলো গাজায় জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য ও জ্বালানি সরবরাহ করা। এই উপকূলীয় অঞ্চলে প্রায় ২৩ লক্ষ মানুষ বাস করে, যারা বিগত ২১ মাসের বেশি সময় ধরে যুদ্ধের শিকার।
বৈঠকের পূর্বে কাল্লাস বলেন, “আমরা ইসরায়েলের সঙ্গে মাঠের পরিস্থিতি সত্যিই উন্নত করতে একটি বোঝাপড়ায় পৌঁছেছি। তবে, এটি কেবল কাগজে সীমাবদ্ধ নয়, এর সঠিক বাস্তবায়ন জরুরি।” তিনি আরও যোগ করেন, “যদি পরিস্থিতির উন্নতি না হয়, তাহলে আমরা সবাই যথেষ্ট কাজ করিনি।” এরপর তিনি যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান।
আয়ারল্যান্ড ও স্পেনের মতো ইউরোপীয় দেশগুলো গাজায় যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলের সঙ্গে ইইউর সম্পর্ক নতুন করে মূল্যায়নের আহ্বান জানিয়েছে। কমিশন একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের কিছু পদক্ষেপ ইইউর সঙ্গে সম্পর্ক বিষয়ক চুক্তির মানবাধিকার বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন করছে। যদিও এই বিষয়ে কিভাবে পদক্ষেপ নেওয়া যায়, তা নিয়ে ইইউর মধ্যে মতভেদ রয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, হামাসের আক্রমণের পর ইসরায়েলি হামলায় নারী ও শিশুসহ প্রায় ৫৮,০০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। তবে, ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হতাহতের সংখ্যা গণনার ক্ষেত্রে বেসামরিক ও যোদ্ধাদের মধ্যে পার্থক্য করে না। জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো হতাহতের নির্ভরযোগ্য পরিসংখ্যান হিসেবে তাদের দেওয়া তথ্যকে বিবেচনা করে।
এই চুক্তির বিষয়ে এক ইইউ কূটনীতিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ইসরায়েলের সঙ্গে হওয়া মানবিক চুক্তিটি প্রমাণ করে যে, ইইউর পক্ষ থেকে চাপ প্রয়োগের ফল পাওয়া গেছে।
বৈঠকে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি, জর্জিয়া ও মলদোভার পরিস্থিতি এবং রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। রাশিয়াকে দুর্বল করতে তেলের দাম কমানোর বিষয়ে ইইউর সদস্য দেশগুলোর মধ্যে এখনো দ্বিমত রয়েছে।
এছাড়াও, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহের জন্য ইইউকে অর্থ দেওয়ার অনুমতি দেবেন। ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের এমন নীতিনির্ধারণী পরিবর্তনকে স্বাগত জানিয়েছেন কাল্লাস। এই পদক্ষেপের ফলে রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে সহায়তা করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস।