গাজা জ্বলছে! ব্রিটিশ এনজিওদের নীরবতা ভাঙার সময়

গাজায় ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসন: যুক্তরাজ্যের এনজিওগুলোর প্রতি কূটনৈতিক আলোচনা বন্ধ করে প্রতিরোধের আহ্বান।

গাজায় ফিলিস্তিনি জনগণের উপর ইসরায়েলের আক্রমণ ক্রমাগত বাড়ছে। এর মধ্যে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাজ্যের মানবাধিকার সংস্থা ও উন্নয়ন সংস্থাগুলোর প্রতি কূটনৈতিক আলোচনা বন্ধ করে প্রতিবাদ, বয়কট এবং আইনি পদক্ষেপের মাধ্যমে প্রতিরোধের আহ্বান জানানো হয়েছে।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। দীর্ঘদিন ধরে গাজায় মানবিক সহায়তাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো ইসরায়েলের এই কর্মকাণ্ডকে গণহত্যার শামিল বলে মনে করে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৮ মাস ধরে চলা ইসরায়েলের বোমা হামলা, গুলি ও বাস্তুচ্যুত করার মতো ঘটনার শিকার হচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। পশ্চিমা মিত্রদের সমর্থন নিয়ে ইসরায়েল এই ধরনের অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে।

যুক্তরাজ্যের সরকারও ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখায় দেশটির এনজিওগুলোর প্রতি ভিন্ন কৌশল অবলম্বনের আহ্বান জানানো হয়েছে।

যুক্তরাজ্যের মানবাধিকার সংস্থাগুলো দীর্ঘদিন ধরে তাদের সরকারের কাছে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন প্রয়োগের দাবি জানিয়ে আসছে। তারা সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেছে, তদবির করেছে এবং বিভিন্ন প্রমাণ উপস্থাপন করেছে।

কিন্তু তাদের কোনো আবেদনে সাড়া পাওয়া যায়নি। এমনকি আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) যখন গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ নিয়ে গণহত্যার অভিযোগের তদন্ত করছে, এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখনও যুক্তরাজ্যের সরকার ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখছে।

এমন পরিস্থিতিতে, ব্রিটিশ এনজিওগুলোকে সরকারের সঙ্গে আলোচনা বন্ধ করে প্রতিবাদ, বয়কট এবং আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে ইসরায়েলের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। গাজায় যা ঘটছে, তাকে গণহত্যা হিসেবে চিহ্নিত করে জনমত তৈরি এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন বাড়ানোর উপর জোর দিতে হবে।

কারণ, সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়াটা ব্রিটিশ পররাষ্ট্রনীতির অংশ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করে। তাই, এই মুহূর্তে সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে, প্রতিবাদ, বয়কট এবং আইনি পদক্ষেপের মাধ্যমে ইসরায়েলের নেতাদের গণহত্যার জন্য জবাবদিহি করতে বাধ্য করা উচিত।

এই পরিস্থিতিতে, গাজায় বসবাস করা মানুষগুলোর জন্য সাহায্য পৌঁছে দেওয়া এবং তাদের পাশে দাঁড়ানো অত্যন্ত জরুরি। যুক্তরাজ্যের মানবাধিকার সংস্থাগুলোর নেওয়া পদক্ষেপগুলো কেবল গাজার মানুষের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং ভবিষ্যতে অন্যান্য সংকট মোকাবিলায় একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *