গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর ভয়াবহ সংঘর্ষ, মৃতের সংখ্যা বাড়ছে : কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিসংখ্যান। জেরুজালেম থেকে প্রকাশিত এক খবরে জানা গেছে, ইসরায়েলের বিমান হামলার তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় গাজায় গত কয়েক দিনের পরিস্থিতি আবারও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর মঙ্গলবার গাজায় নিহত হয়েছেন অন্তত চার শতাধিক ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। যুদ্ধের শুরু থেকে এটি গাজার জন্য অন্যতম একটি ভয়াবহ দিন ছিল।
যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায়ে হামাস প্রায় ২,০০০ ফিলিস্তিনি বন্দীর বিনিময়ে ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেয়। চুক্তি অনুযায়ী, ইসরায়েলের গাজায় মানবিক সহায়তা বাড়ানোর কথা ছিল।
তবে জিম্মি বিনিময়ের পর ইসরায়েল গাজায় সব ধরনের সহায়তা বন্ধ করে দেয়, যার ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের কারণে গাজার প্রায় ২০ লাখ ফিলিস্তিনির জীবন আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।
হামাস বলছে, বোমা হামলার কারণে এখনো তাদের হাতে থাকা ২৪ জন জিম্মির জীবন হুমকির মুখে।
আসুন, এই সংঘাতের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিসংখ্যান জেনে নেওয়া যাক:
- মঙ্গলবার নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা: অন্তত ৪০৪ জন।
- মঙ্গলবার নিহত নারী ও শিশুর সংখ্যা: ২৬৩ জন।
- মঙ্গলবার নিহত হামাসের শীর্ষস্থানীয় সদস্য: ৬ জন।
- ২ মার্চ থেকে ইসরায়েল কতটি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করতে দিয়েছে: শূন্য।
- যুদ্ধ শুরুর পর থেকে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা: কমপক্ষে ৪৮,৯৮১ জন। (হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, নিহতদের অর্ধেকের বেশি নারী ও শিশু)।
- আহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা: কমপক্ষে ১,১২,৬0৩ জন।
- ডিসেম্বর মাসে প্রতিদিন গড়ে কতটি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করেছে: জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী ৯৩টি, ইসরায়েলের হিসাব অনুযায়ী ১৬৩টি।
- যুদ্ধবিরতি শুরুর পর থেকে ২ মার্চ পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে কতটি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করেছে: ৬০০টি।
- ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নিহত মানুষের সংখ্যা: ১,২০০ জন।
- গাজায় ইসরায়েলি স্থল অভিযানে নিহত সৈন্যের সংখ্যা: ৪০৭ জন।
- যুদ্ধ চলাকালীন বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনির সংখ্যা: ১৯ লাখ, যা গাজার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশ।
- বর্তমানে হামাসের হাতে জিম্মি ইসরায়েলি নাগরিক: ২২ জন (৪ জন সেনা সদস্যসহ)।
- হামাসের হাতে নিহত জিম্মির মরদেহ: ৩৫টি (৯ জন সেনা সদস্যসহ)।
- সম্প্রতি যুদ্ধবিরতিতে মুক্তি পাওয়া জিম্মির সংখ্যা: ৩৩ জন।
- ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর জিম্মি হওয়া মানুষের সংখ্যা: ২৫১ জন।
- সম্প্রতি যুদ্ধবিরতিতে মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনি বন্দীর সংখ্যা: ১,৭০০ জনের বেশি।
এই পরিস্থিতিতে গাজার জনগণের জন্য মানবিক সংকট আরও বাড়ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে নিরীহ মানুষের জীবন রক্ষা করা যায়।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস।