গাজায় মৃত্যুমিছিল: ৫০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু, ধ্বংসের চিত্র!

গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৩ হাজারের বেশি।

গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৩ হাজারের বেশি। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই হামলায় এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৫৩ হাজার ১০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি।

আহত হয়েছেন ১ লাখ ১৯ হাজার ৯১৯ জন। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা হাজারো মানুষকে মৃত ধরে নিলে মৃতের সংখ্যা আসলে ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়ে যাবে।

গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলার তীব্রতা এখনো অব্যাহত রয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে খবর পাওয়া যাচ্ছে, এসব হামলায় বহু মানুষ নিহত হয়েছেন।

ফিলিস্তিনের সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি জানিয়েছে, শুধুমাত্র গত রাতে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছেন। এর আগের দিন নিহত হয়েছিলেন ১৪৩ জন।

হামলার তীব্রতা বাড়ায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। হামাস একে ‘বর্বর আগ্রাসন’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।

তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় হামাসকে নির্মূল করার ঘোষণা দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, হামাসকে ধ্বংস করাই তাদের প্রধান লক্ষ্য। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষ করেছেন।

ট্রাম্পের এই সফরের সময় গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি অথবা ত্রাণ সহায়তা শুরু করার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল। কিন্তু ইসরায়েলি কর্মকর্তারা গাজা দখলের পরিকল্পনা করছেন বলে জানা গেছে।

এমনকি ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে বিতাড়িত করারও পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

এদিকে, গাজায় মানবিক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। ইসরায়েলি অবরোধের কারণে সেখানে খাদ্য, ওষুধ ও জরুরি সরবরাহ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

গত ২ মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজায় খাদ্য, ওষুধ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। ইসরায়েলের দাবি, হামাসকে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করতেই তারা অবরোধ এবং সামরিক চাপ অব্যাহত রেখেছে।

অন্যদিকে, হামাসের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা বাসেম নাইম বলেছেন, গাজায় ত্রাণ প্রবেশ করানো যেকোনো আলোচনার পূর্বশর্ত।

তিনি আরও বলেন, খাদ্য, পানি ও চিকিৎসা পাওয়া মানুষের মৌলিক অধিকার, যা কোনো আলোচনার বিষয় হতে পারে না।

যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা একটি পরিকল্পনা তৈরি করছে, যার মাধ্যমে একটি এনজিওর মাধ্যমে ত্রাণ সরবরাহ পুনরায় শুরু করা যেতে পারে।

তবে জাতিসংঘের পাশাপাশি অন্যান্য ত্রাণ সংস্থাগুলো এই উদ্যোগে জড়িত হতে রাজি নয়। তাদের মতে, এটি ত্রাণ কার্যক্রমের নিরপেক্ষতা, স্বাধীনতা ও স্বকীয়তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

গাজায় ত্রাণ বিতরণের বিষয়ে ট্রাম্পও আগ্রহ দেখিয়েছেন। তিনি সম্প্রতি বলেছেন, ‘আমরা গাজার দিকে নজর রাখছি এবং সেখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি। অনেক মানুষ সেখানে অনাহারে দিন কাটাচ্ছে।’

তিনি এর আগে গাজা দখলের ধারণা প্রকাশ করেছিলেন এবং ফিলিস্তিনিদের বিতাড়িত করার কথাও বলেছিলেন। ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের জবাবে হামাস নেতা বাসেম নাইম বলেছেন, গাজা বিক্রির জন্য নয়।

গাজা ফিলিস্তিনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *