গাজায় দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা, পাঁচ লাখ মানুষ অনাহারে দিন কাটাচ্ছে: আন্তর্জাতিক প্রতিবেদন।
গাজা উপত্যকায় মানবিক পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। ইসরায়েলি অবরোধের কারণে সেখানকার প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ অনাহারের শিকার হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত একটি আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনে এই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন’ (আইপিসি)-এর তথ্য অনুযায়ী, গাজায় খাদ্য সংকট চরম আকার ধারণ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৯ মাস ধরে চলা সংঘাত, ব্যাপক বাস্তুচ্যুতি এবং মানবিক সহায়তা কমে যাওয়ার কারণে গাজায় দুর্ভিক্ষ দেখা দেওয়ার গুরুতর ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। গাজার প্রায় ২১ লাখ মানুষের মধ্যে বড় অংশই তীব্র খাদ্য সংকটে ভুগছে।
ইসরায়েলি বাহিনী খাদ্য, জল, ওষুধ এবং জীবন রক্ষাকারী অন্যান্য সামগ্রীর প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়ায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, গাজার প্রায় ৯৩ শতাংশ মানুষ তীব্র খাদ্য সংকটের শিকার। গত অক্টোবরের তুলনায় বর্তমানে খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও শোচনীয়।
অবরোধ অব্যাহত থাকলে পুরো গাজার মানুষ খাদ্য সংকটের ‘সংকটজনক’ পরিস্থিতির মধ্যে পড়বে। মে মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে প্রতি পাঁচজনে একজনের অনাহারে মারা যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি অবরোধের কারণে ইতোমধ্যেই অন্তত ৫৭ জন অনাহারে মারা গেছেন। এছাড়া, গাজার উত্তরাঞ্চল এবং দক্ষিণের রাফাহ শহরে ব্যাপক অপুষ্টি দেখা দিয়েছে।
সেখানের খাদ্যপণ্যের দামও আকাশছোঁয়া। উদাহরণস্বরূপ, ফেব্রুয়ারি মাস থেকে দেইর আল-বালাহ ও খান ইউনিসে গমের আটার দাম বেড়েছে তিন হাজার শতাংশ।
প্রতিবেদনে অবিলম্বে সংঘাত বন্ধ করা, বাধাহীন মানবিক সহায়তা সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং বেসামরিক নাগরিক ও ত্রাণকর্মীদের সুরক্ষার আহ্বান জানানো হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সোমবারের তথ্য অনুযায়ী, গত ৭ অক্টোবর হামাস-এর হামলায় ইসরায়েলে প্রায় ১,১৩৯ জন নিহত হয় এবং ২০০ জনের বেশি মানুষকে বন্দী করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এরপর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গাজায় অন্তত ৫২,৮৬২ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,১৯,৬৪৮ জন আহত হয়েছেন।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা