গাজায় ফের উদ্বাস্তু জীবন: চরম ক্লান্তিতে ফিলিস্তিনিদের আর্তনাদ!

গাজায় ইসরায়েলের নতুন করে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার নির্দেশের ফলে সেখানকার মানুষের জীবনযাত্রা চরম দুর্দশার মধ্যে পড়েছে। উদ্বাস্তু হওয়ার আশঙ্কায় সেখানকার বাসিন্দারা এখন দিশেহারা এবং ক্লান্ত।

অনেকে তাদের সামান্য কিছু জিনিসপত্র নিয়ে নতুন আশ্রয় খোঁজার জন্য ছুটছেন, যদিও যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় নিরাপদ স্থান খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।

যুদ্ধ শুরুর পর গত ১৮ মাসে অধ্যাপক ইহাব সুলাইমান এবং তার পরিবারের সদস্যরা আটবার ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। ১৯শে মার্চ তারিখে জাবালিয়া থেকে তাদের বের করে দেওয়া হয়, তখন তারা কিছু খাবার এবং কম্বল নিয়ে কোনোমতে দক্ষিণে পালিয়ে যান।

সুলাইমান বলেন, “জীবনটা এখন অর্থহীন হয়ে গেছে। আমাদের কাছে জীবন আর মৃত্যুর মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই।”

ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি ভেঙে দেওয়ার পর নতুন করে বোমা হামলা ও স্থল অভিযান শুরু হওয়ায় হাজার হাজার ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তু হয়েছে।

জাতিসঙ্ঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ রোজালিয়া বোলেন জানান, “দেড় বছর ধরে চলা এই যুদ্ধে শিশু থেকে শুরু করে তাদের বাবা-মা পর্যন্ত সবাই শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।”

গত এক মাস ধরে গাজায় খাদ্য, জ্বালানি এবং অন্যান্য জরুরি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। ফলে উদ্বাস্তুদের জন্য তাঁবু বা আশ্রয় বানানোর মতো উপকরণও পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে ত্রাণ সংস্থাগুলো।

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (World Food Programme – WFP) ময়দার অভাবে তাদের বেকারিগুলো বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে, যার ওপর কয়েক লাখ মানুষের রুটির সংস্থান নির্ভরশীল ছিল।

ইসরায়েলের বাস্তুচ্যুতির এই নির্দেশ গাজা শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা, উত্তরের শহরগুলো, খান ইউনিসের কিছু অংশ এবং রাফাহ শহরের প্রায় পুরোটা জুড়েই জারি করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে গাজার মানুষ চরম অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *