গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে ফের হামলা, বাড়ছে মৃতের সংখ্যা, আন্তর্জাতিক মহলের নিন্দা।
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর নতুন করে হামলা শুরুর পর মৃতের সংখ্যা বাড়ছে, আহত হয়েছেন অনেকে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নতুন করে হামলায় অন্তত ৪০৪ জন নিহত এবং ৫৬২ জন আহত হয়েছেন।
ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও মরদেহ থাকতে পারে, ফলে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মাল্টার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট অ্যাবেলার মতে, গাজায় ইসরায়েলের এই হামলা ‘বর্বর’।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক এই হামলাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেছেন, এতে ‘দুর্ভাগ্য আরও বাড়বে’। নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী জোনাস গার স্টোরও গাজার পরিস্থিতির জন্য গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, গাজার অনেক মানুষ তাঁবুতে বা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে বসবাস করছেন। ডাচ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাসপার ভেল্ডকাম্প এক্সে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, ‘মানবিক সহায়তা প্রয়োজন এমন মানুষদের কাছে তা পৌঁছানো উচিত এবং সকল প্রকারের শত্রুতা স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে হবে’। সুইজারল্যান্ড অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ফেরানোর আহ্বান জানিয়েছে।
তবে, ইসরায়েলের এই হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কোনো নিন্দা জানানো হয়নি। বরং হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট জানিয়েছেন, ইসরায়েল নতুন করে হামলা চালানোর আগে যুক্তরাষ্ট্রকে বিষয়টি জানিয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, হামাস এবং যারা ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষতি করতে চায়, তাদের ‘চড়া মূল্য দিতে হবে’।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারির মধ্যে ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় অন্তত ৪৮,৫৭৭ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। ফেব্রুয়ারিতে গাজার মিডিয়া অফিস জানায়, ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও হাজারো মানুষের মরদেহ থাকার কারণে মৃতের সংখ্যা প্রায় ৬২ হাজারে দাঁড়িয়েছে।
গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর ক্ষেত্রেও বাধা সৃষ্টি করছে ইসরায়েল। মার্চ মাসের শুরুতে ইসরায়েল গাজায় সব ধরনের মানবিক সহায়তা পাঠানো বন্ধ করে দেয়, যা একটি যুদ্ধাপরাধ।
এই ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের পরিবর্তে হামাসকে দায়ী করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নও হামাসের প্রতি তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বর্তমানে তিনটি দুর্নীতি মামলা চলছে। এমন পরিস্থিতিতে গাজায় হামলা শুরু হওয়ায় তাঁর বিচার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মহলের নিন্দা সত্ত্বেও গাজায় ইসরায়েলের এই হামলা অব্যাহত রয়েছে। শিশুদের ওপরও চালানো হচ্ছে নৃশংসতা।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জরুরি ভিত্তিতে রক্ত চেয়ে আবেদন জানিয়েছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা