গাজায় জিম্মি থাকা ব্যক্তিদের নিয়ে অনিশ্চয়তা, জীবিতদের সংখ্যা নিয়ে ভিন্নমত। গত ৭ই অক্টোবর হামাস জঙ্গিদের ইসরায়েলে হামলার পর গাজায় জিম্মি করে রাখা ব্যক্তিদের ভাগ্য নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা কাটেনি।
এই পরিস্থিতিতে জিম্মিদের মধ্যে কতজন জীবিত আছেন, তা নিয়ে ইসরায়েলি সরকারের দেওয়া তথ্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের দাবি, জিম্মিদের মধ্যে আরও তিনজন মারা গেছেন।
মঙ্গলবার ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের পর জিম্মিদের পরিবারের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এর আগে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, জীবিত জিম্মির সংখ্যা ২৪ জন।
কিন্তু ট্রাম্পের মন্তব্যের পর জিম্মিদের পরিবারের সদস্যরা ইসরায়েলি সরকারের কাছে নতুন তথ্য জানতে চেয়েছেন।
বুধবার ‘হোস্টেজ অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিস ফোরাম’ এক বিবৃতিতে জানায়, “আমরা আবারও ইসরায়েলি সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি—যদি কোনো নতুন তথ্য লুকানো হয়ে থাকে, তবে তা অবিলম্বে আমাদের জানানো হোক।” একইসঙ্গে, সংগঠনটি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীকে জিম্মিদের ফিরিয়ে না আনা পর্যন্ত যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের সরকারি কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, জীবিত জিম্মির সংখ্যা নিয়ে তাদের মধ্যে ‘গভীর উদ্বেগ’ রয়েছে। তবে তারা নিশ্চিত করে কিছু বলতে রাজি হননি।
ইসরায়েলের কো-অর্ডিনেটর ফর দ্য ক্যাপটিভস অ্যান্ড দ্য মিসিং গাল হিরশ মঙ্গলবার জানিয়েছিলেন, হামাস বর্তমানে ৫৯ জন জিম্মিকে আটকে রেখেছে, যাদের মধ্যে জীবিত আছেন ২৪ জন।
তবে সম্প্রতি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু একটি ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন, জীবিত জিম্মিদের সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা নিশ্চিতভাবে জানি যে ২১ জন জীবিত আছে। বাকি তিনজনের বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে। আমরা কাউকেই হাল ছাড়ছি না।”
এমন পরিস্থিতিতে জিম্মিদের পরিবারের সদস্যরা তাদের স্বজনদের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগে রয়েছেন। গত সপ্তাহে নেতানিয়াহু যখন ‘২৪ জনের বেশি’ জীবিত থাকার কথা বলেছিলেন, তখন তার স্ত্রী সারা নেতানিয়াহু, তাকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, ‘কম’।
এই ঘটনায় জিম্মিদের পরিবারগুলোর মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
একজন জিম্মির মা, আইনভ জাঙ্গাউকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখেন, “যদি প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রীর কাছে জিম্মিদের নিহত হওয়ার কোনো নতুন তথ্য থাকে, তাহলে আমি জানতে চাই, আমার ছেলে মাতান কি এখনো জীবিত আছে, নাকি তাকে বন্দী অবস্থায় হত্যা করা হয়েছে? কারণ আপনার স্বামী যুদ্ধ বন্ধ করতে রাজি নন।”
গত ৭ই অক্টোবর হামাসের হামলায় ২৫০ জনের বেশি মানুষকে জিম্মি করা হয়। এরপর গাজায় যুদ্ধ শুরু হয়, যা এখনো চলমান।
এই পরিস্থিতিতে জিম্মিদের পরিবারের সদস্যরা তাদের স্বজনদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার জন্য আকুল আবেদন জানাচ্ছেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন