গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় শিশুসহ অন্তত ১২৫ ফিলিস্তিনির মৃত্যু।
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নারী ও শিশুসহ অন্তত ১২৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। রবিবার ভোরের দিকে চালানো এই হামলায় খান ইউনিসের আল-মাওয়াসি এলাকার একটি শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা হতাহত হয়েছে। আল জাজিরার সংবাদে এমনটাই জানা গেছে।
চিকিৎসা সূত্রগুলো জানিয়েছে, খান ইউনিসের আল-মাওয়াসি এলাকায় বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের জন্য তৈরি একটি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান বোমা হামলা চালালে সেখানে কমপক্ষে ৩৬ জন নিহত হয় এবং আহত হয় শতাধিক মানুষ। হামলার পর ঘটনাস্থল থেকে তোলা ভয়াবহ ভিডিওতে অনেক মরদেহ দেখা গেছে, যাদের মধ্যে কয়েকজনের শরীরে আগুন লেগে যায়।
আহত ও নিহতদের স্থানীয় একটি হাসপাতালে এবং নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়েছে।
চিকিৎসা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানা যায়, রবিবার সকালে গাজার উত্তরাঞ্চলে ব্যাপক বোমাবর্ষণে ৪২ জনসহ অন্তত ১২৫ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে তিনজন সাংবাদিকও ছিলেন।
গত কয়েকদিনে মৃতের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। আন্তর্জাতিক সমালোচনার মধ্যেই ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে স্থল অভিযান আরও জোরদার করার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, খান ইউনিসে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা আন্তর্জাতিক আইন ও রীতিনীতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং এটি একটি ‘বর্বর অপরাধ’। হামাস আরও জানায়, “সন্ত্রাসী দখলদার সরকারকে রাজনৈতিক ও সামরিক সমর্থন দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকার গাজা উপত্যকায় শিশু, নারী ও বৃদ্ধসহ নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের ওপর এই নৃশংস হামলার সরাসরি দায়ভার বহন করছে।”
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গাজায় ইসরায়েলের অভিযান সম্প্রসারণের নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “ইসরায়েলের স্থল অভিযান আরও বাড়ানোর পরিকল্পনার খবরে আমি উদ্বিগ্ন।”
শনিবার কাতার-এ ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে আলোচনার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। ইসরায়েল জোর দিয়ে বলেছে, মানবিক সহায়তা প্রবেশাধিকারসহ কোনো শর্ত ছাড়াই এই আলোচনা চলছে। মার্চ মাস থেকে গাজায় খাদ্য সংকট দেখা দিলেও মানবিক সহায়তা প্রবেশে সম্পূর্ণভাবে বাধা দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের চরম ডানপন্থী নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে দোহা থেকে আলোচনা দলটিকে ফিরিয়ে আনতে এবং হামাসের সঙ্গে কোনো চুক্তি স্বাক্ষর করা থেকে বিরত থাকতে বলেছেন।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী হাসপাতালগুলোতেও নিয়মিত হামলা চালাচ্ছে এবং সেগুলোকে অকার্যকর করে দিচ্ছে। গত এক সপ্তাহে তারা দুটি হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় রবিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী ভোর থেকে উত্তর গাজার ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালের চারপাশে অবরোধ তৈরি করেছে।
এর ফলে “আহত রোগী এবং চিকিৎসা কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ও বিভ্রান্তি” সৃষ্টি হয়েছে এবং সীমিত সম্পদের কারণে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা