গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত অন্তত ২৫ জন, দুর্ভিক্ষের ঘোষণা গভীর উদ্বেগ
ঢাকা, [তারিখ]। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলায় শনিবার কমপক্ষে ২৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছে। স্থানীয় হাসপাতাল সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। একইসঙ্গে গাজার বৃহত্তম শহরটিতে দুর্ভিক্ষের ঘোষণা বিশ্বজুড়ে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
স্থানীয় হাসপাতাল সূত্রে খবর, খান ইউনিসে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের আশ্রয়শিবিরে চালানো হামলায় ১৪ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া, উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলি বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হয়েছে আরও ৫ জন।
গাজার অন্যান্য অংশে হামলায় আরও ৬ জন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। খাবার ও ত্রাণ সংগ্রহের জন্য অপেক্ষারত ফিলিস্তিনিদের ওপরও হামলা চালানো হয়েছে।
জাতিসংঘের খাদ্য সংস্থা জানিয়েছে, গাজায় খাদ্য সরবরাহ মারাত্মকভাবে কমে গেছে। জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রীর অভাবে সেখানকার মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে।
সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) মতে, বিশ্ব খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা ‘ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেইজ ক্লাসিফিকেশন’ (আইপিসি) জানিয়েছে, গাজা সিটিতে দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে এবং মানবিক সহায়তা অব্যাহতভাবে ব্যাহত হলে তা আরও মারাত্মক রূপ নিতে পারে।
সংস্থাটি মধ্যপ্রাচ্যে এই প্রথম দুর্ভিক্ষের ঘোষণা দিল। এর আগে ইসরায়েল গাজায় ২ মাস ধরে অবরোধ জারি রেখেছিল।
জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলো গাজায় খাদ্য ও অন্যান্য জরুরি সামগ্রী পাঠানোর জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে। তবে ইসরায়েল দুর্ভিক্ষের ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করে একে মিথ্যা হিসেবে অভিহিত করেছে।
তারা বলছে, হামাস জিম্মিদের অনাহার সৃষ্টি করছে। ইসরায়েলের দাবি, তারা পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণ সরবরাহ করছে।
গাজা সিটিতে ব্যাপক সামরিক অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল। ইতোমধ্যেই তারা কৌশলগত এলাকাগুলোতে সেনা মোতায়েন করেছে। সেখানকার পরিস্থিতি বিবেচনায় শহরটিতে যেকোনো সময় বড় ধরনের অভিযান শুরু হতে পারে।
চিকিৎসা বিষয়ক সংস্থা ‘ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস’ (এমএসএফ) জানিয়েছে, গাজা সিটির আশেপাশে তাদের ক্লিনিকগুলোতে বোমা হামলার শিকার হওয়া মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। সংস্থাটি এক বিবৃতিতে বলেছে, “বোমা হামলার কারণে সেখানকার বাসিন্দারা, এমনকি আমাদের কর্মীরাও ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে।
আমরা গাজা সিটি জুড়ে বাস্তুচ্যুতি দেখতে পাচ্ছি।”
অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, জিম্মিদের মুক্তি এবং গাজায় যুদ্ধ বন্ধের জন্য আলোচনা শুরু করতে তিনি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
তবে হামাস যুদ্ধ বন্ধ এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের শর্ত দিয়ে জিম্মিদের মুক্তি দিতে রাজি হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হামাসের এই অবস্থানের সমালোচনা করেছেন।
তিনি বলেন, জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার ব্যাপারে হামাস সম্ভবত আগ্রহী নয়।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস