গাজায় ঈদ উদযাপনের দিনে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ১০ ফিলিস্তিনি নিহত, নিহতদের মধ্যে শিশুও রয়েছে।
খান ইউনিসের আল-মাওয়াসি এলাকায় উদ্বাস্তু শিবিরে চালানো হামলায় ঈদের আনন্দ বিষাদে পরিণত হয়েছে। রবিবার ঈদ-উল-ফিতরের দিনে এই ঘটনা ঘটে, যখন ফিলিস্তিনিরা তাদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব পালন করছিল।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানাচ্ছে, হামলায় নিহতদের মধ্যে অন্তত ৫ জন শিশু রয়েছে। ধ্বংসস্তূপ থেকে শিশুদের নতুন ঈদের পোশাক পরা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়, যা হৃদয়বিদারক দৃশ্য তৈরি করেছে।
মধ্যপ্রাচ্যের সংস্কৃতিতে, ঈদ উপলক্ষে শিশুরা নতুন পোশাক পরে থাকে, যা এই উৎসবের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।
সংবাদ সংস্থা সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে, খান ইউনিসের সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক ইয়ামেন আবু সুলাইমান জানান, হামলায় ২০ জনের বেশি আহত হয়েছে এবং মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
এদিকে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাসকে চাপ দেওয়ার কৌশল কাজ করছে এবং তিনি ফিলিস্তিনিদের এলাকা ছাড়তে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্কিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেছেন। নেতানিয়াহু বলেন, হামাসের সামরিক ও সরকারি সক্ষমতাকে ধ্বংস করা হচ্ছে এবং একই সঙ্গে জিম্মিদের মুক্তির শর্ত তৈরি করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, গাজায় মানবিক সহায়তা কমে যাওয়ায় এবং দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় সেখানকার মানুষের ঈদ উদযাপন কঠিন হয়ে পড়েছে। বাস্তুচ্যুত আমেনা শাকলা সিএনএনকে জানান, যুদ্ধের কারণে তিনি এবার মাত্র এক কেজি কুকি তৈরি করতে পেরেছেন, যা শিশুদের সামান্য আনন্দ দেওয়ার জন্য যথেষ্ট নয়।
আরেকজন ব্যবসায়ী আব্দুল ফাত্তাহ খলিল কারনাউয়ি জানান, ঈদের পোশাকের দাম আকাশছোঁয়া।
এই পরিস্থিতিতে, হামাস পাঁচজন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার বিনিময়ে নতুন করে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে। এই প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে মানবিক সহায়তা প্রবেশ এবং যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনার নিশ্চয়তা।
তবে, ইসরায়েল এই প্রস্তাবের বিপরীতে পাল্টা প্রস্তাব দিয়েছে, যা মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে জানানো হয়েছে।
আল-মাওয়াসি এলাকা, যা আগে ইসরায়েল কর্তৃক মানবিক অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত ছিল, সেখানেও ঘন ঘন হামলা চালানো হচ্ছে। উদ্বাস্তু শিবিরে আশ্রয় নেওয়া হাজার হাজার ফিলিস্তিনি মারাত্মক মানবিক সংকটের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
বর্তমানে, নেতানিয়াহু তার ডানপন্থী জোট এবং জিম্মিদের পরিবারের কাছ থেকে আসা পরস্পরবিরোধী চাপের সম্মুখীন। একদিকে, জোট চায় হামাসের উপর চাপ বাড়াতে, অন্যদিকে জিম্মিদের পরিবার তাদের প্রিয়জনদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন