গাজায় শিশুদের মাঝে অপুষ্টি বাড়ছে, মানবিক বিপর্যয়ের চরম হুঁশিয়ারি!

গাজায় মারাত্মক অপুষ্টি, অবরুদ্ধ অবস্থায় চতুর্থ সপ্তাহে : মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা।

গাজা উপত্যকায় মানবিক সংকট ক্রমেই বাড়ছে। অবরুদ্ধ অঞ্চলের বাসিন্দাদের খাদ্য ও জরুরি চিকিৎসা সামগ্রীর তীব্র অভাব দেখা দিয়েছে, যার ফলস্বরূপ বাড়ছে অপুষ্টি। আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলো সতর্ক করে জানিয়েছে, পরিস্থিতি দ্রুত অবনতির দিকে যাচ্ছে।

ইসরায়েলি অবরোধের কারণে উপত্যকায় প্রবেশ করতে পারছে না কোনো প্রকার সাহায্য। এই অবস্থায় জীবনধারণ কঠিন হয়ে পড়েছে এখানকার মানুষের।

প্রায় দেড় বছর ধরে চলা এই সংঘাতে মৃতের সংখ্যা ৫০,০০০ ছাড়িয়েছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। গত কয়েক সপ্তাহে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নারী ও শিশুসহ বহু মানুষ নিহত হয়েছে।

খান ইউনিসে একটি বাড়িতে বিমান হামলায় হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য সালাহ বারদাউইল নিহত হন। ইসরায়েলি বাহিনী রাফাহ শহরের পশ্চিমাঞ্চলে বসবাসকারীদের এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে।

তাদের জানানো হয়েছে, কোনো ধরনের গাড়িতে করে ওই এলাকা ত্যাগ করা যাবে না।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অপুষ্টির কারণে সেখানকার মানুষের স্বাস্থ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বাজারে খাদ্যপণ্যের দাম আকাশছোঁয়া।

এক কেজি আলুর দাম বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৭০০ টাকার বেশি, যা এক মাস আগের তুলনায় পাঁচগুণ বেশি। রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৭,০০০ টাকায়, যা আগে ছিল প্রায় ১,৭০০ টাকার মতো।

জাতিসংঘের খাদ্য কর্মসূচির অধীনে পরিচালিত ২৩টি বেকারি গ্যাসের অভাবে ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া, জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থা ইউএনআরওয়ার কাছে মাত্র ছয় দিনের মতো আটা মজুত আছে।

গাজার পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটির একজন মুখপাত্র জানান, “এখানে অবিরাম বোমা হামলা চলছে। প্রতিদিন হতাহতের খবর পাওয়া যাচ্ছে, কিন্তু নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে উদ্ধারকর্মীরা সব স্থানে পৌঁছাতে পারছেন না।”

এদিকে, ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা ফিলিস্তিনিদের ‘স্বেচ্ছায়’ গাজা ত্যাগ করার একটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। যদিও আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হতে পারে।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, হামাস জিম্মিদের মুক্তি না দিলে ইসরায়েল গাজার আরও বেশি এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেবে।

এই পরিস্থিতিতে, গাজায় খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পাঠানো অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। সেখানকার মানুষের জীবন বাঁচাতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *