গাজায় হামাস কর্তৃক রেড ক্রসের মাধ্যমে ইসরায়েলের কাছে হস্তান্তর করা কিছু মানুষের দেহাবশেষ জিম্মিদের নয় বলে জানিয়েছে ইসরায়েল। শনিবার ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের এই ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্র-মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতি ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর হামাসের চালানো হামলার পর জিম্মিদের মুক্তি এবং ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে এই যুদ্ধবিরতি হয়।
সংবাদ সংস্থা এপির খবর অনুযায়ী, গত সপ্তাহে হামাস রেড ক্রসের মাধ্যমে তিনজন মানুষের দেহাবশেষ ইসরায়েলের কাছে হস্তান্তর করে। এর আগে শুক্রবার গাজায় ৩০ জন ফিলিস্তিনির মরদেহ ফেরত পাঠায় ইসরায়েল।
এই ঘটনার মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছিল, উভয়পক্ষের মধ্যে হওয়া যুদ্ধবিরতি ধীরে ধীরে হলেও অগ্রসর হচ্ছে। তবে শনিবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানায়, হামাসের দেওয়া দেহাবশেষগুলো জিম্মিদের নয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সামরিক কর্মকর্তা জানান, ইসরায়েলি গোয়েন্দা সূত্রগুলো ইঙ্গিত দিয়েছে যে, নিহতরা গত বছরের ৭ অক্টোবরের হামলায় নিহত হওয়া জিম্মিদের অন্তর্ভুক্ত নয়।
তবে ওই দেহাবশেষগুলো কাদের, তা এখনো জানা যায়নি।
অন্যদিকে, হামাসের সামরিক শাখা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা শুক্রবার কিছু মরদেহ পরীক্ষার জন্য দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু ইসরায়েল তা গ্রহণ করতে রাজি হয়নি।
বরং তারা দেহাবশেষগুলো পরীক্ষার জন্য চেয়েছিল। হামাস জানায়, ইসরায়েলের সন্দেহ দূর করতেই তারা মরদেহগুলো হস্তান্তর করেছে।
যুদ্ধবিরতি শুরুর পর ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা ১৭ জন জিম্মির দেহাবশেষ ফেরত দিয়েছে। এছাড়া, ইসরায়েলও ফিলিস্তিনিদের মরদেহ ফেরত পাঠিয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতির পর ইসরায়েল মোট ২২৫ জন ফিলিস্তিনির মরদেহ ফেরত পাঠিয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৭৫ জনের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে।
ধারণা করা হচ্ছে, নিহতদের মধ্যে কেউ ৭ অক্টোবরের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন, আবার কেউ ইসরায়েলি হেফাজতে মারা গেছেন অথবা যুদ্ধের সময় সেনাদের হাতে নিহত হয়েছেন।
এর আগে, গত সপ্তাহে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ১০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়। রাফায় এক ইসরায়েলি সেনার মৃত্যুর জের ধরে এই হামলা চালানো হয়।
জিম্মিদের মরদেহ ফেরত দিতে দেরি হওয়ায়ও পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস