গাজায় চলমান যুদ্ধ: সংকট সমাধানে ৯০ দিনের একটি প্রস্তাবনা।
গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান সংঘাত বিশ্বজুড়ে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। যুদ্ধ বন্ধের জন্য বিভিন্ন প্রস্তাবনা আসলেও, কোনোটিই এখনো পর্যন্ত ফলপ্রসূ হয়নি।
অন্যদিকে যেমন ফিলিস্তিনিদের মানবিক সংকট বাড়ছে, তেমনি জিম্মিদের মুক্তি নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে, কিভাবে একটি স্থায়ী সমাধানে আসা যায়, তা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা চলছে।
সম্প্রতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক এবং সাবেক মার্কিন সরকারি কর্মকর্তা ব্র্যাট ম্যাকগার্ক একটি নতুন প্রস্তাবনা দিয়েছেন। সিএনএনের একজন বিশ্লেষক হিসেবে তিনি গাজার পরিস্থিতি নিয়ে গভীর পর্যালোচনা করেছেন এবং শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য একটি সম্ভাব্য পথ খুঁজে বের করেছেন।
ম্যাকগার্কের মতে, এই সংকট নিরসনে ৯০ দিনের একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করা যেতে পারে।
প্রস্তাবনার মূল বিষয়গুলো হলো:
- প্রথম ৩০ দিন: ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ রাখবে, যা মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার পথ সুগম করবে। একইসাথে, হামাসকে জীবিত জিম্মিদের অর্ধেক মুক্তি দেওয়ার জন্য একটি সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হবে।
- পরবর্তী ৬০ দিন: জিম্মিদের মুক্তি এবং যুদ্ধ বন্ধের শর্ত নিয়ে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে আলোচনা শুরু হবে। এই আলোচনার মাধ্যমে গাজায় নতুন একটি প্রশাসনিক কাঠামো তৈরি এবং যুদ্ধের চূড়ান্ত সমাপ্তি ঘটানো সম্ভব হবে।
ম্যাকগার্কের মতে, এই পরিকল্পনার মাধ্যমে গাজায় মানবিক সংকট কমানো, জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করা এবং হামাসের উপর চাপ সৃষ্টি করা সম্ভব হবে। এছাড়াও, ফরাসি ও ব্রিটিশ সরকারের ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণার প্রেক্ষাপটে, এই প্রস্তাবনা শান্তি আলোচনার পথ আরও সুগম করতে পারে।
তবে, এই পরিকল্পনার সফলতার জন্য কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো হামাসের সহযোগিতা নিশ্চিত করা। এছাড়াও, আন্তর্জাতিক সমর্থন এবং মধ্যস্থতাকারীদের সক্রিয় ভূমিকাও জরুরি।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, গাজায় শান্তি ফিরিয়ে আনতে হলে, সকল পক্ষের আন্তরিকতা ও ছাড় দেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে। কারণ, যুদ্ধের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ, বাড়ছে মানবিক বিপর্যয়।
এই পরিস্থিতিতে, ম্যাকগার্কের প্রস্তাবনা একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে। এই সংঘাতের প্রভাব শুধু গাজার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এর ঢেউ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও অনুভূত হচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্যের এই অস্থিরতা বিশ্ব অর্থনীতি এবং অভিবাসন সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন