যুদ্ধ থামছে না কেন? গাজায় ধ্বংসের আসল কারণ!

গাজায় যুদ্ধ: কেন এখনো শান্তির দেখা নেই?

ইসরায়েল-হামাস সংঘাত দীর্ঘ ১৯ মাস ধরে চলছে, এবং এর শেষ কবে, তা এখনো অনিশ্চিত। গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান আরও জোরদার করার ঘোষণার পর পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্রশ্ন উঠেছে, এত ধ্বংসযজ্ঞের পরেও কেন শান্তির কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না?

সংঘাতের মূল কারণগুলো হলো ইসরায়েলের পক্ষ থেকে হামাসকে নির্মূল করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা, এবং হামাসের অস্ত্র ত্যাগ করতে রাজি না হওয়া। এছাড়া, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ওপর রাজনৈতিক চাপ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কও এই যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ার পেছনে ভূমিকা রাখছে।

ইসরায়েল বলছে, তারা হামাসকে সম্পূর্ণরূপে নির্মূল না করা পর্যন্ত যুদ্ধ থামাবে না। তাদের লক্ষ্য, ভবিষ্যতে যেন ৭ অক্টোবরের মতো হামলা আর না হয়, তা নিশ্চিত করা। সেই লক্ষ্যে তারা গাজায় তাদের সামরিক এবং প্রশাসনিক ক্ষমতা বিস্তারের চেষ্টা করছে।

অন্যদিকে, হামাস এখনো পর্যন্ত যুদ্ধ বন্ধ করতে রাজি হলেও অস্ত্র ত্যাগ করতে নারাজ। তারা গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং যুদ্ধের সমাপ্তি চাইছে। হামাস গাজার ক্ষমতা অন্য কোনো ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিতে প্রস্তুত, কিন্তু তাদের অস্ত্র সমর্পণ করতে চাইছে না।

অন্যদিকে, নেতানিয়াহু গাজাকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের হাতে ছেড়ে দিতে রাজি নন। তিনি ফিলিস্তিনের জন্য আলাদা রাষ্ট্র গঠনেরও বিরোধী। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, গাজায় হামাসের শাসনের অবসান হলেও ইসরায়েল সেখানে সেনা রাখতে পারে, যা কার্যত নতুন ধরনের একটি দখলদারিত্বের জন্ম দেবে।

যুদ্ধ শুরুর পর থেকে, ইসরায়েলি আক্রমণে গাজায় ৫০,০০০ এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, নিহতদের মধ্যে কতজন জঙ্গি এবং কতজন বেসামরিক নাগরিক, তা আলাদা করে বলা কঠিন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নেতানিয়াহুর সরকারে থাকা কট্টর ডানপন্থী দলগুলো কোনোভাবেই হামাসের সঙ্গে আপোস চায় না। তারা যদি সরকার থেকে সমর্থন তুলে নেয়, তাহলে নেতানিয়াহুর সরকারের পতন হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে নতুন নির্বাচনের সম্ভাবনাও রয়েছে, যা নেতানিয়াহুর ক্ষমতাকে দুর্বল করতে পারে।

এছাড়াও, ইসরায়েলের অনেক নাগরিক নেতানিয়াহুর সরকারের যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট। তারা চান, এখনো যে ৫৯ জন ইসরায়েলি জিম্মি রয়েছেন, তাদের মুক্ত করা হোক। তাদের মধ্যে প্রায় ২৪ জন এখনো জীবিত আছেন বলে ধারণা করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনো পর্যন্ত ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন জুগিয়ে যাচ্ছেন। তিনি হামাসকে এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী করেছেন।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *