১৯৮৯ সালের এপ্রিল মাস, শোকের ছায়া তখনও কাটেনি। হিলসবোরো স্টেডিয়ামে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ দুর্ঘটনায় স্তব্ধ পুরো ফুটবল বিশ্ব।
সেই শোকের মধ্যেই ইংল্যান্ডের ফুটবল দল মাঠে নেমেছিল আলবেনিয়ার বিরুদ্ধে, বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে। মাঠ ছিল ওয়েম্বলি স্টেডিয়াম।
ফলাফল ছিল ৫-০, তবে এই ম্যাচের অন্যতম আকর্ষণ ছিলেন একজন তরুণ ফুটবলার, যাঁর নাম – পল গ্যাসকোয়েন।
গ্যাসকোয়েন, যিনি ফুটবল বিশ্বে ‘গ্যাজা’ নামেই বেশি পরিচিত, সেই ম্যাচে পরিবর্ত হিসেবে মাঠে নামেন এবং নিজের জাত চেনান।
মাঠে নামার পর থেকেই তাঁর খেলা দর্শকদের মন জয় করে নেয়। ম্যাচের ৮৯ মিনিটে তিনি তাঁর প্রথম আন্তর্জাতিক গোলটি করেন।
এই গোলের মধ্যে দিয়ে যেন এক নতুন দিগন্তের সূচনা হয়, যাঁর সাক্ষী থাকে ওয়েম্বলির ৬০ হাজার দর্শক।
হিলসবোরো ট্র্যাজেডির কারণে সেই সময়ের পরিস্থিতি ছিল বেশ কঠিন। খেলোয়াড় থেকে শুরু করে সমর্থক, সবার মনেই ছিল গভীর শোকের ছায়া।
সেই কারণে, এই ম্যাচটি ছিল শোকের আবহ থেকে কিছুটা হলেও বেরিয়ে আসার একটা চেষ্টা। ম্যাচের আগে খেলোয়াড়রা কালো আর্মব্যান্ড পরে মাঠে নামেন এবং নিহতদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
গ্যাসকোয়েন ছিলেন প্রতিভার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তাঁর খেলার ধরন ছিল আক্রমণাত্মক এবং তিনি মাঠের যে কোনও স্থানে খেলতে পারতেন।
তাঁর খেলার ধরন এতটাই আকর্ষণীয় ছিল যে, দর্শকদের মধ্যে তিনি দ্রুত পরিচিতি লাভ করেন। ইংল্যান্ডের তৎকালীন কোচ ববি রবসনও গ্যাসকোয়েনকে নিয়ে বেশ আশাবাদী ছিলেন।
তিনি গ্যাসকোয়েনকে ‘দাফ্ট অ্যাজ আ ব্রাশ’ বললেও, তাঁর প্রতিভার প্রশংসা করতে ভুলতেন না।
আলবেনিয়ার বিরুদ্ধে জয়টি ছিল ইংল্যান্ডের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এর পরেই তারা ইতালি বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে।
গ্যাসকোয়েনের সেই সময়ের পারফরম্যান্স প্রমাণ করে, তিনি ছিলেন ভবিষ্যতের তারকা। তাঁর খেলা দর্শকদের মনে এতটাই দাগ কেটেছিল যে, অনেকে তাঁকে ইংল্যান্ডের ফুটবলের ভবিষ্যৎ হিসেবেও দেখতে শুরু করেছিলেন।
গ্যাসকোয়েনের উত্থান, হিলসবোরো ট্র্যাজেডির শোক এবং সেই সময়ের ফুটবল– সব মিলিয়ে, ১৯৮৯ সালের এপ্রিল মাসটি ছিল ইংরেজি ফুটবলের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান