শিরোনাম: তরুণ প্রজন্মের ম্যানেজারের অভিনব ছুটি নীতি: বাংলাদেশের কর্মক্ষেত্রে এর প্রাসঙ্গিকতা
আধুনিক কর্মপরিবেশে কর্মীদের সুবিধা-অসুবিধা এবং কর্মজীবনের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার বিষয়টি এখন বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। একদিকে যেমন কর্মীদের উৎপাদনশীলতা বজায় রাখতে হবে, তেমনই তাদের মানসিক স্বাস্থ্য এবং ব্যক্তিগত জীবনের প্রতিও নজর রাখতে হয়।
সম্প্রতি, তরুণ প্রজন্মের একজন ম্যানেজারের ছুটি বিষয়ক একটি ব্যতিক্রমী নীতি বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
এলিজাবেথ ডেম্পসি-বেগস নামক এই তরুণ ম্যানেজার তার কর্মীদের ছুটি বিষয়ক আবেদন মঞ্জুর করার ক্ষেত্রে এক ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেন। সাধারণত, তিনি কর্মীদের অসুস্থতা অথবা জরুরি পারিবারিক কোনো ঘটনার জন্য নির্ধারিত ছুটির পরিবর্তে, প্রয়োজন অনুযায়ী ‘অনির্ধারিত’ ছুটি দিয়ে থাকেন।
তবে, কর্মীদের অবকাশ যাপন বা ব্যক্তিগত আনন্দের জন্য ছুটি কাটানোর ক্ষেত্রে তিনি তাদের পূর্বনির্ধারিত ছুটি ব্যবহারের পরামর্শ দেন।
ডেম্পসি-বেগস মনে করেন, কর্মীদের বিশ্রাম ও বিনোদনের জন্য ছুটি নেওয়া উচিত। অপ্রত্যাশিত কোনো ঘটনার জন্য ছুটির আবেদন করার পরিবর্তে, তিনি কর্মীদের সেই সময়টুকু প্রয়োজন অনুযায়ী কাজে লাগানোর সুযোগ দেন।
তার মতে, জরুরি পরিস্থিতিতে কর্মীদের মানসিক শান্তির জন্য ছুটি দেওয়াটা খুবই জরুরি।
আর্মি অফিসার হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে ডেম্পসি-বেগস নেতৃত্ব এবং কর্মীদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শনের গুরুত্ব উপলব্ধি করেছেন। তিনি তার কর্মীদের সবসময় সহযোগিতা করেন এবং তাদের কথা শোনেন।
কর্মীদের মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাস তৈরি করা এবং তাদের ভালো থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করাই তার প্রধান লক্ষ্য।
তিনি মনে করেন, কর্মক্ষেত্রে কর্মীদের ভালো পারফর্ম করার জন্য বিশ্রাম ও মানসিক স্বাস্থ্য খুবই জরুরি। তাই তিনি তার কর্মীদের তাদের ছুটির দিনগুলো ভালোভাবে উপভোগ করার জন্য উৎসাহিত করেন।
অন্যদিকে, কর্মীদের কাছ থেকে ভালো ফল পাওয়ার জন্য তিনি তাদের স্বাধীনতা দেন, তবে একই সঙ্গে কাজের গুণগত মান বজায় রাখার ব্যাপারেও সচেষ্ট থাকেন। ডেম্পসি-বেগস-এর মতে, কোনো কর্মী যদি অসুস্থ অবস্থায় অথবা মানসিক চাপে কাজ করতে বাধ্য হন, তবে তাদের কাছ থেকে ভালো ফল পাওয়া কঠিন।
তাই, কর্মীদের মানসিক শান্তির জন্য সময় দেওয়াটা জরুরি।
এই ম্যানেজারের ছুটি বিষয়ক এই অভিনব নীতি বাংলাদেশের কর্মপরিবেশের জন্য শিক্ষণীয় হতে পারে। আমাদের দেশেও কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্য এবং কর্মজীবনের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার বিষয়টি ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।
অনেক প্রতিষ্ঠানে কর্মীদের জন্য নমনীয় ছুটি নীতি চালু করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। ডেম্পসি-বেগস-এর এই দৃষ্টান্ত, নীতিনির্ধারক এবং ম্যানেজারদের কর্মীদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়ার পাশাপাশি তাদের উৎপাদনশীলতা কিভাবে বাড়ানো যায়, সে বিষয়ে নতুন ধারণা দিতে পারে।
কর্মীদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে এবং তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী ছুটি দেওয়ার মাধ্যমে, একটি ভালো কর্মপরিবেশ তৈরি করা সম্ভব। এতে কর্মীদের মধ্যে কাজের প্রতি আগ্রহ বাড়ে এবং তারা প্রতিষ্ঠানের প্রতি আরও বেশি অনুগত হয়।
তথ্যসূত্র: পিপল