কানাডার আসন্ন নির্বাচনে ফিলিস্তিন ইস্যু একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, যা ভোটারদের মধ্যে তীব্র প্রভাব ফেলছে।
দেশটির রাজনৈতিক দলগুলো, বিশেষ করে ক্ষমতাসীন এবং বিরোধী দল, এই ইস্যুতে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করতে বাধ্য হচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ফিলিস্তিনের প্রতি কানাডার নীতি পরিবর্তনের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন দেশটির উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভোটার, বিশেষ করে আরব ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন।
কানাডার রাজনৈতিক অঙ্গনে বর্তমানে প্রধান দুই দল হলো লিবারেল পার্টি ও কনজারভেটিভ পার্টি। নির্বাচনের আগে জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছে, ফিলিস্তিন ইস্যুতে দলগুলোর ভিন্ন অবস্থানের কারণে ভোটারদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে।
অনেক কানাডিয়ান নাগরিক ইসরায়েলের প্রতি তাদের দেশের অস্ত্র রপ্তানির বিরোধিতা করছেন। সম্প্রতি, দেশটির ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ কানাডিয়ান মুসলিমস (NCCM)-এর করা এক জরিপে দেখা গেছে, অর্ধেকের বেশি কানাডিয়ান ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানি বন্ধের পক্ষে মত দিয়েছেন।
এমনকি, তাদের মধ্যে প্রায় অর্ধেক এই রপ্তানি সম্পূর্ণরূপে বন্ধের পক্ষে, যা দ্বি-পাক্ষিক নিষেধাজ্ঞার দিকে ইঙ্গিত করে।
ফিলিস্তিন ইস্যুতে কানাডার রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দ্বিধা-বিভক্তি দেখা যাচ্ছে। ক্ষমতাসীন লিবারেল পার্টির নেতারা যদিও পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝতে পারছেন, কিন্তু তারা এখনো পর্যন্ত কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি।
অন্যদিকে, বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির নেতারা এই ইস্যুতে কিছুটা রক্ষণশীল অবস্থান গ্রহণ করেছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ফিলিস্তিন ইস্যুতে কোনো একটি নির্দিষ্ট দলের প্রতি সমর্থন জানানো উভয় দলের জন্যই ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
কারণ, এতে একদিকে যেমন ভোটার হারানোর সম্ভাবনা থাকে, তেমনি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
কানাডার মুসলিম ও আরব সম্প্রদায়ের মানুষেরা নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। দেশটির বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায়, বিশেষ করে যেখানে এই সম্প্রদায়ের মানুষের সংখ্যা বেশি, সেখানে তাদের ভোট জয়-পরাজয়ের ক্ষেত্রে নির্ণায়ক হতে পারে।
এই কারণে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের সমর্থন লাভের জন্য ফিলিস্তিন ইস্যুসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তাদের অবস্থান পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হচ্ছে।
কানাডার আসন্ন নির্বাচন তাই শুধু একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া নয়, বরং এটি ফিলিস্তিন সংকটের প্রতি দেশটির দৃষ্টিভঙ্গির একটি প্রতিচ্ছবি।
ভোটারদের মধ্যে ফিলিস্তিন ইস্যু নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ায়, রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য এই বিষয়ে একটি সুস্পষ্ট এবং গ্রহণযোগ্য অবস্থান নেওয়া এখন সময়ের দাবি।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা