বক্সিং কিংবদন্তি জর্জ ফোরম্যান: ৭৭ বছর বয়সে প্রয়াত, শোকের ছায়া

বিখ্যাত বক্সিং কিংবদন্তী জর্জ ফোরম্যান, ৭৬ বছর বয়সে প্রয়াত।

বক্সিং জগতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের পতন। বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন এবং অলিম্পিক স্বর্ণপদক বিজয়ী জর্জ ফোরম্যান ৭৬ বছর বয়সে মারা গেছেন। তার পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২১শে মার্চ, ২০২৪ তারিখে তিনি শান্তিপূর্ণভাবে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ফোরম্যানের প্রয়াণে ক্রীড়া জগতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

জর্জ ফোরম্যান শুধু একজন বক্সার ছিলেন না, তিনি ছিলেন এক কিংবদন্তী। তার বক্সিং জীবনের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ১৯৭৪ সালের ‘রাম্বল ইন দ্য জাঙ্গল’ খ্যাত ঐতিহাসিক লড়াই। ক্যাসিয়াস ক্লে, যিনি পরবর্তীকালে মোহাম্মদ আলী নামে পরিচিত হন, তার সাথে এই ম্যাচে ফোরম্যানের প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল চোখে পড়ার মতো। এই লড়াই শুধু একটি খেলা ছিল না, এটি ছিল আফ্রিকা মহাদেশের জন্য এক বিশাল সাংস্কৃতিক উন্মাদনা।

ফোরম্যান ১৯৬৮ সালের মেক্সিকো সিটি অলিম্পিকে হেভিওয়েট বিভাগে স্বর্ণপদক জয় করেন। এরপর তিনি পেশাদার বক্সিংয়ে নাম লেখান এবং দ্রুতই পরিচিতি লাভ করেন। তার শক্তিশালী ঘুষি এবং কৌশল তাকে বক্সিংয়ের ইতিহাসে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়।

১৯৭৩ সালে জো ফ্রেজিয়ারকে পরাজিত করে তিনি প্রথম বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন হন।

বক্সিং থেকে অবসর নেওয়ার পর ফোরম্যান ধর্মীয় কাজে মনোনিবেশ করেন এবং একজন যাজক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। তিনি তার সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে অত্যন্ত সম্মানিত ছিলেন।

পরবর্তীতে তিনি আবার বক্সিংয়ে ফিরে আসেন এবং ১৯৯৪ সালে মাইকেল মুরারকে পরাজিত করে বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন হন।

ফোরম্যান শুধু একজন ক্রীড়াবিদ বা ধর্মযাজক ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন সফল উদ্যোক্তাও। তার ‘জর্জ ফোরম্যান গ্রিল’ বিশ্বজুড়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে।

ব্যক্তিগত জীবনে ফোরম্যান ছিলেন ১২ সন্তানের জনক। তার পরিবার সব সময়ই তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ২০১৬ সালে তার কন্যা ফ্রিদা ফোরম্যানের মৃত্যু হয়।

জর্জ ফোরম্যানের জীবন ছিল সংগ্রাম ও সাফল্যের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তার বক্সিং কৌশল, উদ্যোক্তা হিসেবে খ্যাতি এবং ধর্মীয় জীবন তাকে স্মরণীয় করে রাখবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *