বিখ্যাত বক্সার এবং উদ্যোক্তা জর্জ ফোরম্যানের প্রয়াণ, ৭৬ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি। বিশ্ব ক্রীড়া জগতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে, কারণ ফোরম্যান শুধু একজন ক্রীড়াবিদ ছিলেন না, ছিলেন অনুপ্রেরণার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
মার্চ মাসের ২১ তারিখে, ফোরম্যান তাঁর পরিবারের সদস্যদের মাঝে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছিলেন। ফোরম্যানের পরিবার এক বিবৃতিতে জানায়, তিনি ছিলেন একজন নিবেদিতপ্রাণ ধর্মযাজক, স্নেহময় স্বামী, ভালোবাসাময় পিতা এবং গর্বিত দাদা ও প্রপিতামহ।
জর্জ ফোরম্যানের জন্ম ১৯৪৯ সালের ১০ই জানুয়ারি, টেক্সাসের মার্শাল শহরে। শৈশব কেটেছে দারিদ্র্যের মধ্যে। ১৯৬৮ সালের মেক্সিকো সিটি অলিম্পিকে হেভিওয়েট বিভাগে স্বর্ণপদক জয় করে তিনি বিশ্বজুড়ে পরিচিতি লাভ করেন। এরপর পেশাদার বক্সিংয়ে নাম লেখান এবং একের পর এক জয় পেতে থাকেন।
১৯৭৩ সালে কিংস্টনে জো ফ্রেজিয়ারকে হারিয়ে প্রথম বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হন তিনি। তবে, তাঁর জীবনের সবচেয়ে আলোচিত লড়াইটি ছিল ১৯৭৪ সালে, কিনেরসাতে, মোহাম্মাদ আলীর বিরুদ্ধে। ‘রাম্বল ইন দ্য জাঙ্গল’ নামে পরিচিত সেই ম্যাচে আলী ফোরম্যানকে পরাজিত করেন।
অনেকেই মনে করেন, এই পরাজয় ফোরম্যানের ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। বক্সিং থেকে অবসর নেওয়ার পর ফোরম্যান ধর্মচর্চায় মনোনিবেশ করেন এবং যাজক হন। এরপর আবার ফিরে আসেন বক্সিংয়ে।
১৯৯৪ সালে, তিনি ৪৪ বছর বয়সে মাইকেল মুরারকে নকআউট করে বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন হন, যা তাঁর দ্বিতীয় বিশ্ব খেতাব ছিল। খেলা থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি ব্যবসায় নামেন এবং সেখানেও সফল হন।
বিশেষ করে ‘জর্জ ফোরম্যান গ্রিল’ নামক খাদ্য প্রস্তুতকারক যন্ত্রের বিপণনে তাঁর সাফল্য ছিল ঈর্ষণীয়। এই পণ্যটির মাধ্যমে তিনি বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পান এবং বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করেন। ফোরম্যান তাঁর আত্মজীবনীতে লিখেছিলেন, “আমি যে কোনও পণ্য বিক্রি করি, তার প্রেমে পড়ি।
জর্জ ফোরম্যানের পাঁচ ছেলে, পাঁচ মেয়ে এবং দুই দত্তক কন্যাসহ বিশাল পরিবার ছিল। তাঁর প্রয়াণে ক্রীড়া ও ব্যবসায় জগতের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান