আতঙ্কের ছবি! পাঠকদের থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে জর্জ এম জনসনের বই?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লাইব্রেরিগুলোতে বই বিতর্কের ঝড় : সেন্সরশিপের বিরুদ্ধে বাড়ছে উদ্বেগ।

যুক্তরাষ্ট্রের গ্রন্থাগারগুলোতে বই বাছাই এবং বিতরণের স্বাধীনতা বর্তমানে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। আমেরিকান লাইব্রেরি অ্যাসোসিয়েশন (এএলএ)-এর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, বিভিন্ন বই সরিয়ে ফেলার যে চেষ্টাগুলো হচ্ছে, তার পেছনে অভিভাবকদের চেয়ে বরং বিভিন্ন গোষ্ঠী ও রাজনৈতিক কর্মকর্তাদের সক্রিয়তা বাড়ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে বিতর্কের জেরে বই সরানোর ঘটনা কিছুটা কমলেও, পরিস্থিতি এখনো উদ্বেগজনক। সবচেয়ে বেশি সমালোচিত বইগুলোর মধ্যে অন্যতম হল জর্জ এম. জনসনের লেখা ‘অল বয়েজ আরেন্ট ব্লু’। এছাড়াও তালিকায় রয়েছে মায়া কোবাবে-র ‘জেন্ডার কুইয়ার’, টনি মরিসনের ‘দ্য ব্লুয়েস্ট আই’, এবং জন গ্রিনের ‘লুকিং ফর আলাস্কা’র মতো বইগুলো।

এএলএ’র দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বই বিতর্কের মূল কারণগুলো হল– বইগুলোতে এলজিবিটিকিউ+ বিষয়ক বিষয়বস্তু, মাদকাসক্তি, দাসত্ব এবং যৌন নির্যাতনের মতো স্পর্শকাতর বিষয়গুলোর উপস্থাপন। এ ধরনের অভিযোগের কারণে অনেক লাইব্রেরিয়ান এখন বিতর্কিত বই সংগ্রহ করা থেকে বিরত থাকছেন।

তাদের আশঙ্কা, এমনটা করলে তারা হয়তো আইনি ঝামেলায় পড়তে পারেন।

যুক্তরাষ্ট্রে বই বিতর্কের এই প্রবণতা নতুন নয়। গত কয়েক বছর ধরেই এমন ঘটনা বাড়ছে। টেক্সাস, ফ্লোরিডা, আইওয়া এবং উটাহ’র মতো রাজ্যগুলোতে ইতোমধ্যে স্কুল লাইব্রেরিতে কী ধরনের বই রাখা যাবে, সে বিষয়ে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

লাইব্রেরির স্বাধীনতা এবং বই নির্বাচনের ক্ষেত্রে এমন হস্তক্ষেপ নিঃসন্দেহে উদ্বেগের বিষয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বইয়ের ওপর এমন নিয়ন্ত্রণ মূলত একটি ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করে। এর ফলে, পাঠকরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রয়োজনীয় বই থেকে বঞ্চিত হয়।

একইসাথে, লেখকদেরও তাদের কাজ প্রকাশ করতে দ্বিধা বোধ করতে হয়।

বাংলাদেশেও মুক্তচিন্তা এবং বইয়ের স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দেশেও বিভিন্ন সময়ে বই নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে।

তাই, যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য একটি সতর্কবার্তা হতে পারে। এক্ষেত্রে, দেশের গ্রন্থাগারগুলোতে বই নির্বাচনের ক্ষেত্রে আরও সচেতন হতে হবে এবং জনগণের কাছে সব ধরনের বই পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

একইসাথে, সেন্সরশিপের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়াটাও জরুরি।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *