সুপারম্যানের মৃত্যু: বন্দুকের গুলিতে জর্জ রিভসের রহস্যজনক পরিণতি!

সুপারম্যান হিসেবে খ্যাত অভিনেতা জর্জ রিভস-এর মৃত্যু: রহস্য আজও অমীমাংসিত।

১৯৫০-এর দশকে, যখন টেলিভিশন সবে তার জনপ্রিয়তা লাভ করতে শুরু করেছে, সেই সময়ে সুপারম্যান চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের মন জয় করেছিলেন জর্জ রিভস। কিন্তু এই অভিনেতার জীবন হঠাৎই থেমে যায়, যখন মাত্র ৪৫ বছর বয়সে ১৯৫৯ সালে তার মৃত্যু হয়।

পুলিশের মতে, রিভস-এর মৃত্যু ছিল আত্মহত্যা, তবে ঘটনার কিছু অসঙ্গতি এবং বিভিন্ন জনের পরস্পরবিরোধী বক্তব্যে এই মৃত্যু নিয়ে আজও রহস্য ঘোরাফেরা করে।

জর্জ রিভস-এর মৃত্যুর কারণ হিসেবে প্রাথমিকভাবে একটি বন্দুকের গুলির কথা বলা হয়। ঘটনার রাতে, রিভস তার বাগদত্তা লিওনোর লেমনের সাথে একটি সন্ধ্যায় বাইরে গিয়েছিলেন।

গভীর রাতে তারা বাড়ি ফিরে আসেন। এরপর রিভস ঘুমোতে যান, কিন্তু লেমন তার বন্ধুদের সাথে আড্ডা চালিয়ে যান।

গভীর রাতে রিভস তাদের শান্ত হতে বললে, লেমন নাকি তার বন্ধুদের বলেছিলেন, “ওপরে গিয়ে নিজেকে গুলি করবে।” এরপর গুলির শব্দ শোনা যায়।

ঘটনার তদন্তে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নজরে আসে, যা এই মৃত্যুকে আরও রহস্যময় করে তোলে। যেমন, বন্দুকটিতে কোনো আঙুলের ছাপ পাওয়া যায়নি।

রিভস-এর হাতেও কোনো বারুদের চিহ্ন ছিল না। প্রত্যক্ষদর্শীরা একটি গুলির শব্দ শুনেছিলেন, কিন্তু ফরেনসিক পরীক্ষায় জানা যায়, বন্দুক থেকে তিনটি গুলি চালানো হয়েছিল।

এমনকি, একটি বুলেট পাওয়া গিয়েছিল রিভসের শরীরের নিচে। স্বাভাবিক আত্মহত্যার ঘটনার সঙ্গে এই বিষয়গুলো বেশ মেলে না।

যদিও পুলিশের তরফে এটিকে আত্মহত্যা হিসেবেই চিহ্নিত করা হয়েছিল, তবে অনেকেই এই সিদ্ধান্তে সহমত ছিলেন না। রিভস-এর সহকর্মী এবং বন্ধুরা তার জীবন সম্পর্কে ভিন্ন ধারণা পোষণ করতেন।

তাদের মতে, রিভস ছিলেন প্রাণবন্ত এবং কর্মঠ একজন মানুষ।

এই মৃত্যুরহস্যের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বেশ কয়েকটি তত্ত্ব। এর মধ্যে অন্যতম হলো, রিভস-এর বাগদত্তা লিওনোর লেমনের জড়িত থাকার সম্ভাবনা।

শোনা যায়, ঘটনার দিন রাতে তাদের মধ্যে তীব্র ঝগড়া হয়েছিল এবং এর জেরেই এই ঘটনা ঘটে। যদিও এর কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

আরেকটি তত্ত্ব হলো, রিভস-এর বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের ফল। তিনি টনি ম্যানিক্স নামের এক নারীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে সম্পর্কে ছিলেন।

টনির স্বামী ছিলেন হলিউডের প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, প্রযোজনা সংস্থার প্রধান এডি ম্যানিক্স। রিভস যখন টনির সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে দেন এবং লিওনোর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেন, তখন অনেকেই ধারণা করেন, এর পেছনে টনি অথবা এডি ম্যানিক্সের হাত থাকতে পারে।

ঘটনার কয়েক বছর পর, টনির বিষয়ে একটি কথা শোনা যায়। তিনি নাকি এক পুরোহিতের কাছে রিভসকে হত্যার কথা স্বীকার করেছিলেন।

আবার, রিভস-এর মৃত্যুর দিন সকালে টনি, ফিলোis কোটস নামক আরেক অভিনেত্রীকে ফোন করে জানান, “ছেলেটি মারা গেছে, তাকে খুন করা হয়েছে।”

জর্জ রিভস-এর মৃত্যু আজও একটি অমীমাংসিত রহস্য। এই ঘটনা হলিউডের সোনালী অতীতের এক অন্ধকার দিক উন্মোচন করে, যা দর্শকদের মনে আজও কৌতূহল জাগিয়ে তোলে।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *