সান্তোসের প্রতারণা: ৭ বছরের জেল, স্তম্ভিত সবাই!

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক কংগ্রেসম্যান জর্জ স্যান্টোসকে সাত বছরের বেশি কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনী প্রচারণার সময় অর্থ আত্মসাৎ ও প্রতারণার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর এই সাজা ঘোষণা করা হয়।

নিউ ইয়র্কের লং আইল্যান্ডে শুক্রবার (স্থানীয় সময়) এক আদালতে এই রায় আসে। এই ঘটনার মাধ্যমে বিতর্কিত এই রাজনীতিবিদের রাজনৈতিক জীবনের অবসান হলো।

জর্জ স্যান্টোস, যিনি এক সময় রিপাবলিকান দলের হয়ে কংগ্রেসের সদস্য ছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ ছিল। তিনি ভোটারদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন এবং নিজের সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন।

এমনকি তিনি নিজের জীবন কাহিনী নিয়েও মিথ্যাচার করেছেন। এই সকল অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।

আদালতে জর্জ স্যান্টোস তাঁর কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি নিজেকে ‘লজ্জিত’ এবং ‘অনুশোচনা’ করছেন বলেও জানান।

তিনি বলেন, তিনি তাঁর নির্বাচনী এলাকার মানুষের আস্থা ভেঙেছেন। তবে বিচারক তাঁর অনুশোচনা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

বিচারক স্যান্টোসের সাজা ঘোষণার সময় বলেন, ‘আপনার অনুশোচনা কোথায়? আমি তো তা দেখতে পাচ্ছি না।’

অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর আদালত স্যান্টোসকে ৮৭ মাসের কারাদণ্ড দেয়। এছাড়াও, তাঁকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রায় তিন লাখ ৭৩ হাজার ডলার পরিশোধ করতে হবে।

সেই সঙ্গে, প্রায় দুই লাখ পাঁচ হাজার ডলারের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হবে।

জর্জ স্যান্টোস এর আগে স্বীকার করেছিলেন যে তিনি নির্বাচনে জেতার জন্য অনুদান সংগ্রহ করতে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছিলেন। তিনি ডজনখানেক মানুষের পরিচয় ব্যবহার করে অর্থ সংগ্রহ করেন, যাদের মধ্যে তাঁর পরিবারের সদস্যরাও ছিলেন।

এছাড়াও, তিনি নিজের জীবন ও অভিজ্ঞতা সম্পর্কে মিথ্যা গল্প তৈরি করেছিলেন।

স্যান্টোসের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে তিনি নিজের ব্যক্তিগত কাজে অনুদানের অর্থ খরচ করেছেন। এর মধ্যে ছিল ছুটি কাটানো, বিলাসবহুল সামগ্রী কেনা এবং ‘অনলি ফ্যানস’-এর মতো ওয়েবসাইটে অর্থ ব্যয় করা।

২০২৩ সালে প্রতিনিধি পরিষদ থেকে বিতাড়িত হওয়ার আগে তিনি এক বছরের কম সময় ধরে কংগ্রেসম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে, তিনি নিউ ইয়র্কের তৃতীয় কংগ্রেসনাল জেলার প্রতিনিধিত্ব করেন।

জর্জ স্যান্টোসের এই দুর্নীতি ও প্রতারণার বিষয়টি মার্কিন রাজনীতিতে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এই রায়ের মাধ্যমে, রাজনীতিবিদদের জবাবদিহিতার বিষয়টি আরও একবার সামনে এসেছে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *