জর্জটাউন স্কলার: হামাস-যোগের অভিযোগে বিতর্কে, কী জানা যাচ্ছে?

যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত হওয়ার ঝুঁকিতে জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষক, অভিযোগ হামাস-এর সঙ্গে সম্পর্ক।

যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ভারতীয় বংশোদ্ভূত জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষক, বাদার খান সুরিকে (Badar Khan Suri) বিতাড়িত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে দেশটির সরকার। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে যে তিনি হামাস-এর (Hamas) পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন এবং একজন সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।

তবে, সুরির আইনজীবীরা বলছেন, এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

জানা গেছে, বাদার খান সুরি বর্তমানে জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি গবেষণা করছেন। তাঁর আইনজীবীর দাবি, সুরির স্ত্রী একজন ফিলিস্তিনি-মার্কিন নাগরিক হওয়ায়, তাঁকেও এই বিতর্কের সঙ্গে জড়ানো হচ্ছে।

গত সোমবার রাতে, অভিবাসন কর্মকর্তারা সুরিকে আটক করেন এবং তাঁর ভিসাও বাতিল করা হয়। এরপর থেকে তিনি লুইজিয়ানার একটি ডিটেনশন সেন্টারে বন্দী রয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র দপ্তর (Department of Homeland Security) এক বিবৃতিতে জানায়, বাদার খান সুরি সামাজিক মাধ্যমে হামাসের পক্ষে প্রচার চালাতেন এবং ইহুদিবিদ্বেষী মন্তব্য করতেন।

এছাড়াও, তাঁর সঙ্গে একজন ‘চিহ্নিত বা সন্দেহভাজন’ সন্ত্রাসীর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল।

অন্যদিকে, সুরির আইনজীবী এবং পরিবারের সদস্যরা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁদের দাবি, বাদার খান সুরি একজন নিবেদিতপ্রাণ গবেষক এবং মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে তাঁর আগ্রহ রয়েছে।

তাঁর আইনজীবীরা আরও বলছেন যে, সুরির আটকের পেছনে মূল কারণ হলো তাঁর স্ত্রীর ফিলিস্তিনি পরিচয় এবং ফিলিস্তিন ইস্যুতে তাঁর (স্ত্রীর) দেওয়া বক্তব্য।

আদালতে দাখিল করা এক আবেদনে জানানো হয়েছে, বাদার খান সুরি তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গাজায় গিয়েছিলেন। তাঁর স্ত্রী, মাফিজ সালেহ (Mapheze Saleh), একজন মার্কিন নাগরিক এবং কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার (Al Jazeera) সাবেক কর্মী।

সালেহ জানিয়েছেন, গাজা যুদ্ধের শুরুতে তিনি সামাজিক মাধ্যমে সেখানকার মানুষের প্রতি সমর্থন জানিয়ে পোস্ট করেছিলেন।

সালেহ-এর বাবা একসময় হামাসের রাজনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন। তবে, তিনি এখন হামাস সরকারের সঙ্গে যুক্ত নন।

বাদার খান সুরি এবং তাঁর স্ত্রীর পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা এই বিষয়টির আইনি প্রক্রিয়ার ওপর নজর রাখছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাদার খান সুরির বিরুদ্ধে কোনো অবৈধ কার্যকলাপের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

এই বিতর্কের মধ্যে, আদালত বাদার খান সুরিকে আপাতত দেশ থেকে বিতাড়িত না করার নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার শুনানির জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *