যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতির কড়াকড়ির মধ্যে এবার আটক করা হয়েছে জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ফেলোকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বুধবার জানানো হয়েছে, বাদার খান সুরি নামের ওই ফেলোকে আটক করেছে দেশটির হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ।
তিনি ইরাক ও আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠা বিষয়ক গবেষণার জন্য ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন।
জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট রবার্ট গ্রোভস বোর্ডের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে জানিয়েছেন, বাদার খান সুরি একজন ভারতীয় নাগরিক। তাঁর ভিসা বাতিল করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানতে পেরেছে, তাঁকে আটক করা হয়েছে। তবে তাঁর কোনো অবৈধ কাজের খবর তাদের জানা নেই এবং আটকের কারণও জানানো হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র সিএনএনকে বলেছেন, “আমরা আশা করি, আইনি প্রক্রিয়া এই মামলার সুষ্ঠু সমাধান করবে।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটির মুখপাত্র ট্রিয়া ম্যাকলাফলিন এক বিবৃতিতে জানান, সুরি সামাজিক মাধ্যমে হামাস-এর প্রচারণা চালাতেন এবং ইহুদি বিদ্বেষ ছড়াতেন।
তাঁর পরিচিতদের মধ্যে হামাসের একজন শীর্ষ উপদেষ্টা রয়েছেন, যিনি পরিচিত বা সন্দেহভাজন সন্ত্রাসী।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারকো রুবিও শনিবার এক সিদ্ধান্তে জানান, সুরির কার্যক্রম এবং যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর উপস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুরুতর পররাষ্ট্রনৈতিক ক্ষতির কারণ হতে পারে।
এর ভিত্তিতে তাঁকে বিতাড়িত করা যেতে পারে।
সুরির আইনজীবী হাসান আহমেদ সিএনএনকে জানান, তাঁর মক্কেল বর্তমানে লুইজিয়ানায় ইমিগ্রেশন আদালতের শুনানির অপেক্ষায় আছেন। তিনি বুধবার রাতে সুরির সঙ্গে কথা বলেছেন।
তিনি আরও বলেন, “আমাদের সরকার একজন নিরীহ মানুষকে ধরে নিয়ে জেলে বন্দী করছে, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। যদি কোনো পণ্ডিত, যিনি সংঘাত নিরসনে কাজ করেন, তাঁকে সরকার পররাষ্ট্রনীতির জন্য ক্ষতিকর মনে করে, তাহলে সমস্যাটা সম্ভবত পণ্ডিতের নয়, বরং সরকারেরই।
জানা গেছে, বাদার খান সুরি জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘আলওয়ালিদ বিন তালাল সেন্টার ফর মুসলিম-খ্রিস্টান আন্ডারস্ট্যান্ডিং’-এর ফেলো ছিলেন। তিনি এই বছর সাউথ এশিয়ায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা ও সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে একটি কোর্সও করাচ্ছিলেন।
এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনিপন্থী বিক্ষোভকারীদের ওপর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর পদক্ষেপের বিষয়টিও সামনে এসেছে। এই ধরপাকড়ের কারণে দেশটির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে, বিশেষ করে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এর আগে, কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ট্রাম্প প্রশাসন খলিলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী সমর্থক ও হামাসকে সমর্থন করার অভিযোগ আনে, যদিও এর কোনো প্রমাণ তারা দিতে পারেনি।
খলিলের মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তিনি বিতাড়িত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন।
তথ্যসূত্র: সিএনএন