জর্জিয়ার একটি ব্যাপটিস্ট কলেজ, ট্রুয়েট ম্যাককনেল ইউনিভার্সিটি, তাদের প্রেসিডেন্ট এমির ক্যানারকে পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে। প্রাক্তন এক শিক্ষার্থীর উপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, এক প্রাক্তন প্রশাসক, যিনি আগে শিক্ষকতা করতেন, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের কারণেই এই ব্যবস্থা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, ক্যানার জুন মাস থেকে ছুটিতে ছিলেন। এরপর ট্রাস্টি বোর্ড প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তদন্তের নির্দেশ দেয়।
অভিযোগ ছিল, ওই প্রাক্তন প্রশাসক এক ছাত্রীকে একাধিকবার যৌন নির্যাতন করেছেন। পরে ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী হিসেবেও কাজ করেছেন।
অভিযোগকারিণীর দাবি, বাইবেল পাঠের জন্য ওই ব্যক্তির বাড়িতে গেলে তাঁর উপর এই নির্যাতন চালানো হত।
তদন্ত শেষে ট্রাস্টি বোর্ডের কাছে রিপোর্ট পেশ করা হয়। যদিও সেই রিপোর্টের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
তবে শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট জন ইয়ারব্রো জানান, ক্যানারের পদত্যাগ সংক্রান্ত বিষয়গুলো এখনো আলোচনাধীন, তবে তিনি এখন আর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট পদে নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাঁরা বিষয়টি প্রথম জানতে পারেন চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে। যখন ওই প্রশাসক জানান, শেরিফের কার্যালয় তাঁর বিরুদ্ধে একটি ‘অশালীন সম্পর্ক’-এর তদন্ত করছে।
এরপরেই ওই কর্মীর চাকরি চলে যায়। জানা গেছে, ওই ব্যক্তি ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থেকে ‘যৌনতামূলক’ এবং ‘ধর্মীয়ভাবে বিকৃত’ ই-মেল পাঠিয়েছেন।
আবেদনকারীর আইনজীবী মার্সিয়া শেইন জানিয়েছেন, শেরিফের তদন্তে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ প্রমাণ করার মতো যথেষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।
ক্যানারের বিরোধীরা অভিযোগ করেছেন, ওই ঘটনার বিষয়ে যারা প্রশ্ন তুলেছিলেন, তাঁদেরকে তিনি সরিয়ে দিয়েছেন। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
মার্চিয়া শেইন ট্রাস্টি বোর্ডের কাছে অভিযোগ জানিয়ে চিঠি লিখেছিলেন। তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই ঘটনার বিষয়ে অনেক আগে থেকেই অবগত ছিল।
এমনকি, ছাত্রছাত্রীরা ওই শিক্ষকের অপসারণ চেয়ে আবেদনও করেছিলেন। শেইন জানিয়েছেন, ক্যানারের এই পদত্যাগ ‘সঠিক সিদ্ধান্ত’।
তিনি বলেন, “এটা কোনো রাজনৈতিক বা বিদ্বেষপূর্ণ পদক্ষেপ নয়, বরং এটি ছিল নিরাময় এবং পরিবর্তনের সঠিক সময়। এই সাহসী নারীরা, যারা এগিয়ে এসেছেন, এবং অন্যরা যারা ভয় পেয়েছিলেন, তাঁদের সবারই এখন নিরাময় এবং পরিবর্তনের জন্য সমর্থন দরকার।”
তবে, যৌন নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রী ট্রুয়েট ম্যাককনেল ইউনিভার্সিটির বিরুদ্ধে মামলা করেননি। কারণ, জর্জিয়ার আইন অনুযায়ী, এই ধরনের মামলার সময়সীমা চার বছর।
যদিও, হোয়াইট কাউন্টি জেলার অ্যাটর্নি জেফ ল্যাংলি জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি আবার খতিয়ে দেখছেন।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস