বিখ্যাত ফরাসি অভিনেতা জেরার দেপর্দিয়েউ-এর বিরুদ্ধে ওঠা যৌন হেনস্তার অভিযোগের বিচার শুরু হয়েছে প্যারিসের একটি আদালতে।
অভিযোগ উঠেছে, ২০২১ সালে ‘লে ভোলেত ভার্টস’ (The Green Shutters) সিনেমার শুটিং চলাকালীন সময়ে তিনি এক নারীর সঙ্গে আপত্তিকর আচরণ করেছিলেন।
অভিযোগকারী নারী হলেন সিনেমার সেট ডেকোরেটর অ্যামেলি কে।
অভিযোগের শুনানিতে দেপর্দিয়েউ স্বীকার করেছেন যে তিনি অ্যামেলির নিতম্ব ধরেছিলেন, তবে এটিকে কোনো যৌন হেনস্তা হিসেবে মানতে নারাজ তিনি।
বরং তার দাবি, ঘটনার দিন তিনি খুব ক্লান্ত ছিলেন এবং অ্যামেলির কাজে অসন্তুষ্ট হয়ে এমনটা করেছিলেন।
আদালতে অ্যামেলি জানান, দেপর্দিয়েউ তাকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে স্পর্শ করেছিলেন, এমনকি তার দুই পায়ের মধ্যে আটকে রেখেছিলেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, অভিনেতা তার উদ্দেশ্যে কিছু অশ্লীল মন্তব্যও করেছিলেন।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে অ্যামেলি বলেন, “তিনি আমাকে ধরেছিলেন এবং আমার শরীরের সামনে ও পেছনে, সর্বত্র স্পর্শ করেছিলেন।
আমার কোনো নড়াচড়ার সুযোগ ছিল না।
তিনি আমার স্তনও স্পর্শ করেছিলেন।
আমি খুব ভয় পেয়েছিলাম, আর তিনি হাসছিলেন।”
অন্যদিকে, দেপর্দিয়েউ আদালতে বলেছেন, অ্যামেলির কাজের ধরন নিয়ে তিনি বিরক্ত ছিলেন।
তার মতে, অ্যামেলি কাজটি ভালোভাবে করছিলেন না।
তাই, তার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়েছিল।
তিনি আরও জানান, অতিরিক্ত ওজনের কারণে অ্যামেলিকে তার দুই পায়ের মাঝে রাখা তার পক্ষে সম্ভব ছিল না।
আদালতে দেপর্দিয়েউ-এর আইনজীবী জেরেমি আসুস জানিয়েছেন, তার মক্কেলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন।
তিনি এই মামলার তদন্তকারীদের অভিযুক্ত করে বলেন, তাদের মধ্যে দেপর্দিয়েউকে ফাঁসানোর একটা প্রবণতা কাজ করছে।
ফরাসি চলচ্চিত্রে দেপর্দিয়েউ একজন সুপরিচিত নাম।
১৯৮০-এর দশকে ‘দ্য লাস্ট মেট্রো’, ‘পুলিশ’ এবং ‘সিরানো ডি বার্গারাক’-এর মতো ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি খ্যাতি অর্জন করেন।
এরপর ‘গ্রিন কার্ড’ (Green Card) ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি হলিউডেও পরিচিতি পান।
তিনি কেনেথ ব্রানার পরিচালিত ‘হ্যামলেট’, অ্যাং লি-এর ‘লাইফ অফ পাই’ এবং নেটফ্লিক্সের ‘মার্সেই’ সিরিজেও অভিনয় করেছেন।
এই মামলার রায় যদি দেপর্দিয়েউ-এর বিপক্ষে যায়, তাহলে তাকে পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং ৭৫ হাজার ইউরো জরিমানা হতে পারে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা