অভিনেতা দেপার্দিয়ের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মামলার রায়, কী হতে চলেছে?

ফরাসি চলচ্চিত্র জগতের খ্যাতিমান অভিনেতা জেরার দেপার্দিয়েউ-এর বিরুদ্ধে ওঠা যৌন নিপীড়নের অভিযোগের মামলার রায় ঘোষণার অপেক্ষায় বিশ্ব। ২০২১ সালে একটি সিনেমার শুটিং চলাকালীন সময়ে দুই নারীর সঙ্গে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার প্যারিসের আদালতে এই মামলার রায় ঘোষণার কথা রয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, ৭৬ বছর বয়সী দেপার্দিয়েউ ‘লে ভলেট ভার্টস’ (Les Volets Verts) সিনেমার শুটিং চলাকালীন এক সেট নির্মাণ কর্মী ও একজন সহকারী পরিচালকের সঙ্গে আপত্তিকর আচরণ করেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিনেতাকে পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং ৭৫,০০০ ইউরোর (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮৭ লাখ টাকার বেশি) জরিমানা হতে পারে।

মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, সেট নির্মাণ কর্মী অ্যামেলির (আসল নাম প্রকাশ করা হয়নি) সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন দেপার্দিয়েউ। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, অভিনেতা ওই নারীর গোপনাঙ্গে এবং নিতম্বে হাত দিয়েছিলেন।

অ্যামেলি আদালতে জানান, ঘটনার সময় তিনি প্যারাসোল খুঁজছিলেন। তিনি আরও বলেন, “আমি বুঝতে পেরেছিলাম, তাঁর ক্ষমতা কতখানি। তিনি আমাকে খুব শক্ত করে ধরেছিলেন। আমি তাঁর চোখের দিকে তাকিয়েছিলাম।

তাঁর বড় মুখ, লাল চোখ—খুব রাগান্বিত দেখাচ্ছিল। তিনি বলছিলেন, ‘এসো, আমার বড় প্যারাসোলে হাত দাও’—যেন উন্মাদ!”

আরেকজন সহকারী পরিচালক, যাঁর নাম প্রকাশ করা হয়নি, তিনিও অভিনেতার বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ এনেছেন। তিনি জানান, দেপার্দিয়েউ তিনবার তাঁর স্তন ও নিতম্বে স্পর্শ করেছিলেন।

আদালতে জেরার দেপার্দিয়েউ অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, সিনেমার সেটে তিনি মাঝে মাঝে কিছু অশালীন শব্দ ব্যবহার করতেন, তবে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ভিত্তিহীন।

ফরাসি কৌঁসুলি লরাঁ গুই দেপার্দিয়েউকে দোষী সাব্যস্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি অভিনেতার ‘পুরোপুরি অস্বীকার করা এবং আত্ম-সমালোচনা করতে ব্যর্থ হওয়ার’ নিন্দা করেন।

অন্যদিকে, দেপার্দিয়েউ-এর আইনজীবী জেরেমি আসুস এই অভিযোগগুলোকে মিথ্যা এবং একজন ‘মহান মানুষ’-কে ‘ধ্বংস’ করার ষড়যন্ত্র হিসেবে অভিহিত করেছেন।

এই মামলার রায় ঘোষণার পাশাপাশি, দেপার্দিয়েউ-এর বিরুদ্ধে আরও একটি ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে, যা অভিনেত্রী শার্লট আর্নল্ডের করা। সেই মামলার শুনানির তারিখ এখনো নির্ধারিত হয়নি।

এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে #মি টু (MeToo) আন্দোলনের প্রভাব নতুন করে আলোচনায় এসেছে। এই আন্দোলনের মাধ্যমে নারীরা কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছেন।

আন্তর্জাতিক সংবাদ সূত্র থেকে জানা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *