জার্মানিতে হারিয়ে যাওয়া বিড়ালকে খুঁজে পেতে দম্পতির ২০ লক্ষ টাকার বেশি খরচ।
একটি বিড়াল হারিয়ে যাওয়ার পর তাকে খুঁজে বের করতে জার্মানির এক দম্পতি প্রায় এক বছর ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের প্রিয় পোষ্যটিকে ফিরে পাওয়ার জন্য তাঁরা ইতিমধ্যে ২২,০০০ মার্কিন ডলারের বেশি (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৪ লক্ষ টাকা) খরচ করেছেন।
২০২৪ সালের জুলাই মাসে, “নেরো” নামের একটি কালো বিড়াল জার্মানির এরলাঙ্গেন শহর থেকে হারিয়ে যায়। এরপর থেকেই রাফাল ও মনিকা ক্ল্যাইন্সমিট নামের এই দম্পতি তাঁদের আদরের বিড়ালটিকে খুঁজে বের করার জন্য বিভিন্ন প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। নেরোর বুকে সাদা একটি চিহ্ন রয়েছে এবং তার চোখ দুটি হালকা সবুজ রঙের।
জানা গেছে, নেরোকে খুঁজে বের করার জন্য তাঁরা প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৪৮৩ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে তাদের বাড়ি এশভেগ থেকে এরলাঙ্গেনে যান। এছাড়া, তাঁরা বিশেষ ক্যামেরা ও নেরোর প্রিয় খাবার কিনেছেন, যাতে করে বিড়ালটিকে খুঁজে পেতে সুবিধা হয়।
রাফাল জানিয়েছেন, তাঁরা নিয়মিতভাবে এরলাঙ্গেনের বাড়িগুলোতে গিয়ে তাদের বিড়ালটির ছবি দেখাচ্ছেন এবং পোস্টার লাগাচ্ছেন। এমনকি, তাঁরা আটটি খাবারের বাটিতে টুনা মাছ রেখে দিয়েছেন, যা নেরোর খুব প্রিয়।
এই দম্পতি তাঁদের বিড়ালটিকে খুঁজে পাওয়ার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সাহায্য চেয়েছেন। “নেরো – আইন বাব ফোরলোরেন ইন এরলাঙ্গেন” নামে একটি ফেসবুক পেজ খোলা হয়েছে, যেখানে প্রায় ৩,৯০০ জন ফলোয়ার ও ২,৪০০ জন লাইক করেছেন।
রাফাল জানিয়েছেন, নেরো তাঁদের কাছে একটি পরিবারের সদস্যের মতো। তিনি বলেন, “আমি হাল ছাড়ব না। আমি জানি, সে এখনো বেঁচে আছে।” তিনি আরও যোগ করেন, নেরোর শরীরে একটি মাইক্রোচিপ লাগানো রয়েছে।
কোনো পশুচিকিৎসক বা উদ্ধারকারী দল যদি তাকে খুঁজে পায়, তাহলে এই চিপের মাধ্যমে সহজেই তার পরিচয় জানা যাবে।
রাফাল মনে করেন, নেরো লাজুক স্বভাবের হওয়ায় তাকে খুঁজে বের করতে সমস্যা হচ্ছে। তিনি বলেন, “সমস্যা হলো, সে খুবই লাজুক প্রকৃতির। সে সহজে মানুষের কাছে যায় না।” হারানো বিড়ালটিকে খুঁজে পেতে সমাজের সকলের সাহায্য চেয়ে তিনি বলেন, “যদি কেউ নেরোকে খুঁজে পান, তাহলে অনুগ্রহ করে তাকে নিরাপদে রাখুন এবং পশুচিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান।
এছাড়াও, অন্যান্য হারিয়ে যাওয়া বিড়ালদের উদ্ধারেও আপনারা সাহায্য করতে পারেন।
বর্তমানে, বিশ্বজুড়ে অনেকেই নেরোর জন্য প্রার্থনা করছেন। এরলাঙ্গেনের ফেসবুক পেজে এক পোস্টে লেখা হয়েছে, “আমি খুবই আনন্দিত যে, এই খবরটি এখন এরলাঙ্গেনের অনেক ইংরেজি ভাষাভাষী মানুষের কাছে পৌঁছেছে, বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের কাছে, যারা হয়তো আগে নেরো সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। হয়তো তাদের মধ্যে কেউ নেরোকে দেখে থাকতে পারেন অথবা তাকে আশ্রয়ও দিয়েছেন।”
তথ্য সূত্র: পিপলস