জার্মানিতে একটি চরম ডানপন্থী সংগঠনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। দেশটির সরকার ‘জার্মানির রাজ্য’ নামের একটি সংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে এবং এর শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে। সংগঠনটি জার্মানির গণতান্ত্রিক কাঠামোকে দুর্বল করে দেওয়ার চেষ্টা করছিল। খবরটি নিশ্চিত করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এপি।
সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘জার্মানির রাজ্য’ নামের এই সংগঠনটি “Reichsbürger” আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত। Reichsbürger-দের ধারণা, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগের জার্মান সাম্রাজ্য এখনও বিদ্যমান। তারা আধুনিক জার্মানির আইন ও নিয়ম-কানুনকে মানতে নারাজ। এমনকি তারা কর দিতে এবং জরিমানাও দিতে অস্বীকার করে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এই সংগঠনের সদস্যরা তাদের নিজস্ব একটি “প্রতি-রাষ্ট্র” তৈরি করেছিল। তারা জার্মানির ফেডারেল সরকারের বাইরে নিজেদের একটি আলাদা জগৎ তৈরি করতে চেয়েছিল। এর মাধ্যমে তারা বিভিন্ন অর্থনৈতিক অপরাধমূলক কাজ চালাচ্ছিল। সরকারের মতে, এই সংগঠনের প্রায় ১ হাজার সক্রিয় সদস্য এবং ৬ হাজারের বেশি সমর্থক রয়েছে।
২০১২ সালে পিটার ফিটজেক নামের এক ব্যক্তি এই সংগঠনের ঘোষণা করেন। তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি জার্মানির উইটেনবার্গ শহরে এই সংগঠনের গোড়াপত্তন করেন। জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডবরিংট এক বিবৃতিতে জানান, এই সংগঠনের সদস্যরা ইহুদি-বিদ্বেষী ষড়যন্ত্র তত্ত্বের মাধ্যমে তাদের ক্ষমতা জাহির করতে চেয়েছিল, যা কোনোভাবেই জার্মানি সহ্য করবে না।
আলেকজান্ডার ডবরিংট আরও বলেন, “আমরা আমাদের মুক্ত গণতান্ত্রিক কাঠামোর উপর আঘাত হানতে চাওয়াদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেব।” তিনি জানান, এই সংগঠনের অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে এবং তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হবে, যাতে তারা আর কোনো ধরনের উগ্রবাদী কার্যক্রম চালাতে না পারে।
জার্মানিতে “Reichsbürger” গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘটনা নতুন নয়। ২০২৩ সালে, পুলিশ তাদের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে প্রায় ২০ জনের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছিল। এছাড়াও, ২০২২ সালে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে অভিযুক্তদের বিচার শুরু হয়েছিল।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস