জার্মানির সংসদ দেশটির অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে এবং সামরিক সক্ষমতা বাড়াতে বিশাল অংকের অর্থ ব্যয়ের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। মঙ্গলবার বুন্দেসটাগে এই সংক্রান্ত একটি পরিকল্পনা পাস হয়, যার ফলে কয়েক দশক ধরে জার্মানির চলে আসা রক্ষণশীল আর্থিক নীতিতে পরিবর্তন আসছে।
এই নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, অবকাঠামো খাতে উন্নয়নের জন্য ৫০০ বিলিয়ন ইউরোর (প্রায় ৬১ লাখ কোটি টাকা) একটি তহবিল গঠন করা হবে। এছাড়া, সামরিক খাতে ব্যয় বাড়াতে বিদ্যমান ঋণ গ্রহণের নিয়ম শিথিল করা হবে। ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জার্মানি, রাশিয়া এবং তৎকালীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নীতি পরিবর্তনের কারণে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে রয়েছে বলে মনে করছে।
এই পরিস্থিতিতে নিজেদের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করা জরুরি। জার্মানির রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হলো ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা এবং একটি শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মধ্য-ডানপন্থী দল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন (সিডিইউ) এবং সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এসপিডি) জোট সরকার গঠনের আলোচনা করছে। তারা চাইছে, দ্রুত এই বিলটি পাস করানো হোক।
কারণ, আগামী ২৫শে মার্চের মধ্যে নতুন বুন্দেসটাগ গঠিত হলে বিলটি আটকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জার্মানির রাজনীতিবিদ ফ্রায়েডরিশ মেরজ মনে করেন, বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
তিনি উল্লেখ করেন, রাশিয়া এখন আগ্রাসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে, এবং যুক্তরাষ্ট্রের নীতিও অনিশ্চিত। মেরজ আরও বলেন, জার্মানির উচিত ইউরোপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নেতৃত্ব দেওয়া এবং এই দায়িত্ব পালনে প্রস্তুত থাকা।
এই বিলটি এখন বুন্দেসটাগের উচ্চকক্ষ, অর্থাৎ ফেডারেল রাজ্যগুলোর প্রতিনিধিদের সভায় যাবে। সেখানে অনুমোদন পাওয়ার পর এটি আইনে পরিণত হবে। জার্মান সরকার মনে করে, এই পদক্ষেপের ফলে ইউরোপের নিরাপত্তা আরও সুসংহত হবে এবং জার্মানি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা