ঘিসলেইন ম্যাক্সওয়েল, যিনি কুখ্যাত জেফরি এপস্টাইনের সঙ্গে শিশুদের যৌন নির্যাতনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন, তাকে টেক্সাসের একটি ফেডারেল কারাগারের সর্বনিম্ন নিরাপত্তা বিভাগে স্থানান্তর করা হয়েছে। এই খবরে কারাগারের অন্য বন্দীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
২০২১ সালে শিশুদের পাচার এবং যৌন নির্যাতনের অভিযোগে ২০ বছরের কারাদণ্ড পাওয়া ম্যাক্সওয়েলকে ফ্লোরিডার একটি বেশি নিরাপত্তা-সংবলিত কারাগার থেকে ব্রায়ানের এই ক্যাম্পে পাঠানো হয়। তার আইনজীবী ডেভিড ও. মার্কাস জানিয়েছেন, ম্যাক্সওয়েলের নিরাপত্তার জন্যই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
তবে এই পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, সাধারণত এই ধরনের অপরাধের জন্য অভিযুক্ত কাউকে এত হালকা নিরাপত্তা-ব্যবস্থা সম্পন্ন কারাগারে পাঠানো হয় না।
ব্রায়ানের এই কারাগারে মূলত শ্বেতাঙ্গ এবং আর্থিক অপরাধের সঙ্গে জড়িত বন্দীরা থাকেন। কর্তৃপক্ষের ধারণা, ম্যাক্সওয়েলের কারণে এখানকার স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্নিত হতে পারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কারারক্ষী জানিয়েছেন, ম্যাক্সওয়েলের আগমনের পর সেখানকার কর্মীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
কারা ক্যাম্পের নিয়ম অনুযায়ী, এখানে বন্দীদের কিছু সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা। যেমন – তারা প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য কুকুর পেতে পারেন অথবা কাজের জন্য বাইরে যেতে পারেন।
কিন্তু ম্যাক্সওয়েলের ক্ষেত্রে এই সুবিধাগুলো পাওয়া কঠিন হবে। কারণ, তার অপরাধের গুরুত্ব অনেক বেশি। এমনকি, এখানকার একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতেও তার অংশগ্রহণের সম্ভাবনা কম।
কুকুর প্রশিক্ষণের একটি কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার কথা ছিল এমন একজন বন্দীকে সম্প্রতি এই প্রোগ্রাম থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর তাকে অন্য একটি ফেডারেল ডিটেনশন সেন্টারে পাঠানো হয়।
ম্যাক্সওয়েলের কারাগারে আসার পর সেখানকার অনেক বন্দীর মধ্যে এক ধরনের নীরবতা দেখা যাচ্ছে। কেউ তার সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন।
এমনকি, ম্যাক্সওয়েল বর্তমানে কোন ইউনিটে আছেন, সে বিষয়েও অনেকে অবগত নন।
মার্কিন সিনেটর শেলডন হোয়াইটহাউস এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছেন। তিনি জানতে চেয়েছেন, কেন ম্যাক্সওয়েলকে এই ধরনের কারাগারে পাঠানো হলো।
তবে এখন পর্যন্ত তিনি কোনো উত্তর পাননি।
এই কারাগারে ‘ক্যানাইন কম্প্যানিয়ন্স’ নামে একটি প্রোগ্রাম রয়েছে, যেখানে বন্দীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য কুকুর সরবরাহ করা হয়। তবে ম্যাক্সওয়েলকে এই প্রোগ্রামে অন্তর্ভুক্ত করা হবে না।
কারণ, এই প্রোগ্রামের প্রধান জানিয়েছেন, শিশুদের প্রতি অপরাধের সঙ্গে জড়িত কাউকে তারা এই সুযোগ দেন না।
বর্তমানে এই ক্যাম্পে কিয়ান্ডা, লিসা সপ্তম, লুইসা পঞ্চম, ম্যাভিস চতুর্থ, হেক্টর সপ্তম এবং গেটর পঞ্চম – এই ছয়টি কুকুর রয়েছে, যাদের ১৫ জন প্রশিক্ষক রয়েছেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন