যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাণিজ্য যুদ্ধ: বিশ্ব বাজারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ সাময়িকভাবে বন্ধ হওয়ার ফলে বিশ্বজুড়ে শেয়ার বাজারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। বুধবার এশিয়ার বাজারে এর প্রভাব ছিল স্পষ্ট, যেখানে কিছু সূচকে ঊর্ধ্বগতি দেখা যায়, আবার কোনো কোনো বাজারে সামান্য পতনও হয়।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই “যুদ্ধ বিরতি” কত দিন স্থায়ী হবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা এখনো কাটেনি, যে কারণে বিনিয়োগকারীরা রয়েছেন সতর্ক অবস্থানে।

চীনের বাজারগুলোতে এই চুক্তির ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচক ২.৩ শতাংশ বেড়ে ২৩,৬৪০.৬৫-তে পৌঁছেছে, এবং সাংহাই কম্পোজিট ইনডেক্স-ও প্রায় ১ শতাংশ বেড়েছে।

প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর শেয়ারেও উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, টেনসেন্ট হোল্ডিংস-এর শেয়ারের দাম ৩ শতাংশ এবং আলিবাবা গ্রুপের শেয়ার ৩.৪ শতাংশ বেড়েছে। বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন, এই চুক্তির ফলে আগামী ৯০ দিনের মধ্যে চীনে রপ্তানি বাণিজ্য বাড়তে পারে।

অন্যদিকে, জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক সামান্য ০.১ শতাংশ কমেছে। তবে, দক্ষিণ কোরিয়ার কোস্পি সূচক ১.২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার এসঅ্যান্ডপি/এএসএক্স ২০০ সূচক-ও সামান্য বেড়েছে।

ইউরোপের বাজারগুলোতে মিশ্র প্রবণতা দেখা গেছে। ফ্রান্সের সিএসি ৪০ সূচক ০.৫ শতাংশ এবং জার্মানির ডিএএক্স সূচক ০.১ শতাংশ কমেছে। ব্রিটেনের এফটিএসই ১০০ সূচক-ও সামান্য কমেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেও ছিল মিশ্র প্রভাব। ওয়াল স্ট্রিটে শেয়ার কেনাবেচা বেড়েছে, কারণ গত মাসের মূল্যস্ফীতি কমেছে এমন খবর পাওয়া গেছে। তবে, ডাউ জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ ০.৬ শতাংশ কমেছে, কিন্তু নাসডাক কম্পোজিট ১.৬ শতাংশ বেড়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ব অর্থনীতি বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে রয়েছে। বাণিজ্য চুক্তির মেয়াদ এবং শুল্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকায় অনেক বিনিয়োগকারী এখন সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। তারা আশা করছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্রুতই তার বাণিজ্য নীতি সহজ করবেন, যাতে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা এড়ানো যায়।

বুধবার সকালে তেলের বাজারেও কিছুটা দরপতন হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের ব্যারেল প্রতি দাম ৬৬.২৯ ডলারে নেমে এসেছে, যেখানে আগের দিন এর দাম ছিল সামান্য বেশি।

মুদ্রা বাজারে, মার্কিন ডলারের বিপরীতে জাপানি ইয়েনের দাম কমেছে, যেখানে ইউরোর দাম বেড়েছে।

এই বাণিজ্য চুক্তির ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কেমন প্রভাব পড়বে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে, বিশ্ব অর্থনীতির এই পরিবর্তনের দিকে আমাদের সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে, কারণ এর মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থানের সুযোগের ওপর প্রভাব পড়তে পারে।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *