যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় গাড়ি প্রস্তুতকারক জেনারেল মোটরস (জিএম) আমদানি শুল্কের কারণে বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির লোকসান হয়েছে ১.১ বিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় (৯,৬০০ কোটি টাকা)।
মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। শুল্কের কারণে জিএমের মুনাফা ২১ শতাংশ কমে গেছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে নেওয়া শুল্ক নীতির ফলস্বরূপ জিএমের এই ক্ষতি হয়েছে। কোম্পানিটি জানিয়েছে, বছরের শেষ নাগাদ তাদের ক্ষতির পরিমাণ ৪ থেকে ৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে গাড়ির দাম বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই। তবে, বিশ্লেষকরা বলছেন, এই শুল্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের গাড়ি শিল্পে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে বাইরে থেকে গাড়ি এবং গাড়ির যন্ত্রাংশ আমদানি করার ওপর এই শুল্ক বসানো হয়েছে। গত ৩ এপ্রিল থেকে এই নিয়ম কার্যকর হয়েছে।
বর্তমানে আমদানি করা গাড়ির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক ধার্য করা হচ্ছে। জিএম জানিয়েছে, তারা এখনো বছরে ১০ থেকে ১২.৫ বিলিয়ন ডলার পরিচালন মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ধরে রেখেছে।
শুধু জিএম নয়, তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানি স্টেলাంటిসও (Stellantis) শুল্কের কারণে ক্ষতির শিকার হয়েছে। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে কোম্পানিটির ক্ষতির পরিমাণ ছিল প্রায় ৩৫০ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৩,০৭২ কোটি টাকা)।
স্টেলাంటిসের বিক্রিও কমেছে, যার প্রধান কারণ ছিল উৎপাদন কমে যাওয়া এবং কিছু মডেলের আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়া। দ্বিতীয় প্রান্তিকে তাদের বিক্রি ১০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই শুল্ক নীতির কারণে বিশ্বজুড়ে গাড়ির উৎপাদন এবং সরবরাহ ব্যবস্থায় প্রভাব পড়তে পারে। এর ফলে গাড়ির দাম বাড়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।
যদিও জিএম এখনই দাম বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা করছে না, তবে পরিস্থিতি দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকলে, বাজারে এর প্রভাব দেখা যেতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং শুল্ক নীতি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গাড়ি শিল্প।
এর ফলে বিশ্ব অর্থনীতির ওপরও একটা চাপ তৈরি হয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন