ফরাসি এক ব্যক্তির বাড়িতে লুকানো অবস্থায় পাওয়া গেল সোনার মুদ্রার বিশাল এক সংগ্রহ। সম্প্রতি নিলামে সেগুলি বিক্রি হয়েছে, যার মূল্য প্রায় সাড়ে তিন মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী প্রায় ৪০ কোটি টাকার বেশি)। খবরটি শুনে অনেকেই হয়তো অবাক হবেন, তবে এমনটাই ঘটেছে ফ্রান্সে।
পোল নার্স নামের ওই ব্যক্তি ফ্রান্সের দক্ষিণ-পশ্চিমের একটি গ্রামে বাস করতেন। সাধারণ জীবন যাপন করা এই মানুষটি তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত অত্যন্ত গোপনে প্রাচীন মুদ্রা সংগ্রহের নেশা পুষে রেখেছিলেন। তিনি যে এত বড় একটি সংগ্রহ গড়ে তুলেছেন, সে সম্পর্কে খুব কম লোকই জানতেন।
নার্সের মৃত্যুর পর তাঁর বাড়িতে থাকা একটি চিত্রকর্মের পেছনে লুকানো অবস্থায় উদ্ধার করা হয় এই মূল্যবান মুদ্রাগুলো।
ঐতিহাসিক এই মুদ্রাগুলোর মধ্যে খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতকের মেসিডোনিয়ার কিংডমের সময়ের মুদ্রা যেমন ছিল, তেমনই ছিল ফরাসি সম্রাট চতুর্দশ লুই, পঞ্চদশ লুই এবং ষোড়শ লুইয়ের শাসনামলের মুদ্রা। মুদ্রাগুলোর মধ্যে কিছু ছিল সোনার তৈরি, আবার কিছু ছিল বিভিন্ন ধাতুর মিশ্রণে তৈরি।
মুদ্রা বিশেষজ্ঞ থিয়েরি পার্সির মতে, নার্সের সংগ্রহটি সংখ্যা এবং দুর্লভতার দিক থেকেও ছিল অসাধারণ। তাঁর সংগ্রহে এক হাজারের বেশি মুদ্রা ছিল।
নার্সের কোনো সরাসরি উত্তরাধিকারী ছিল না। তাঁর মৃত্যুর পর যখন বাড়িটি খালি করা হচ্ছিল, তখনই নজরে আসে এই গুপ্তধনের কথা। নিলাম সংস্থা বোসঁ লেফেভ্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্যারিসে অনুষ্ঠিত নিলামে সব মুদ্রা বিক্রি হয়ে গেছে।
নিলামের আগে এর মূল্য ২ মিলিয়ন ইউরোর (প্রায় ২৩ কোটি টাকা) কাছাকাছি ধরা হয়েছিল, তবে বিক্রির পর সেই অনুমানকেও ছাড়িয়ে গেছে এর দাম।
আশ্চর্যের বিষয় হলো, নার্স অত্যন্ত সাধারণ জীবন যাপন করতেন। তিনি তাঁর সমস্ত অর্থ এই মুদ্রা সংগ্রহের পেছনে ব্যয় করেছেন। তাঁর এই গোপন সংগ্রহের কথা বাইরের জগৎ জানতে পারতো না, যদি না তাঁর মৃত্যুর পর বাড়িটি পরিষ্কার করার সময় ঐ চিত্রকর্মের আড়ালে লুকানো মুদ্রাগুলো খুঁজে পাওয়া যেত।
তথ্য সূত্র: সিএনএন
