গুগল-এর নতুন পদক্ষেপ: পরমাণু শক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মিশেল
বিশ্বজুড়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (Artificial Intelligence) চাহিদা বাড়ছে, আর সেই চাহিদা মেটাতে বিশাল পরিমাণ বিদ্যুতের প্রয়োজন।
এই পরিস্থিতিতে, প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগল (Google) পরমাণু শক্তি উৎপাদনে হাত মিলিয়েছে। সম্প্রতি, গুগল এবং এলিমেন্টল পাওয়ার (Elementl Power) নামক একটি সংস্থার মধ্যে তিনটি নতুন পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের চুক্তি হয়েছে।
এই কেন্দ্রগুলো থেকে প্রায় ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
গুগল এই প্রকল্পে মূলধন সরবরাহ করবে, তবে তাদের বিনিয়োগের পরিমাণ এখনো জানা যায়নি।
গুগল-এর ডেটা সেন্টার এনার্জি বিভাগের প্রধান আমান্ডা পিটারসন করিও (Amanda Peterson Corio) এই প্রসঙ্গে জানান, “এলিমেন্টল পাওয়ার-এর সঙ্গে আমাদের সহযোগিতা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এবং আমেরিকান উদ্ভাবনের অগ্রযাত্রায় প্রয়োজনীয় গতি বজায় রাখতে সহায়ক হবে।”
পরমাণু শক্তিকে নির্ভরযোগ্য এবং কার্বন-মুক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এলিমেন্টল পাওয়ার-এর চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ক্রিস কোলবার্ট (Chris Colbert) বলেছেন, “আমরা গুগলের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী এবং নিরাপদ, কার্বন-মুক্ত, নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্য প্রযুক্তি খাতের বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায়, গত বছর প্রায় ২৫টি রাজ্যে উন্নত পরমাণু শক্তিকে সমর্থন করে আইন পাস হয়েছে।
নিউক্লিয়ার এনার্জি ইনস্টিটিউট-এর তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরেও পরমাণু শক্তির সমর্থনে ২০০টির বেশি বিল পেশ করা হয়েছে।
এই পদক্ষেপগুলি মূলত প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা মেটানোর উদ্দেশ্যে নেওয়া হচ্ছে।
অ্যামাজন (Amazon) এবং মাইক্রোসফটের (Microsoft) মতো অন্যান্য বড় প্রযুক্তি সংস্থাগুলিও ছোট আকারের পরমাণু চুল্লি (small nuclear reactors) প্রকল্পে বিনিয়োগ করছে।
এখানে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য একটি বিষয় হলো, থ্রি মাইল আইল্যান্ড (Three Mile Island) পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পুনরায় চালু করার পরিকল্পনা করছে কনস্টেলেশন এনার্জি (Constellation Energy)।
এই কেন্দ্রটি মাইক্রোসফটের ডেটা সেন্টারগুলির জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে।
উল্লেখ্য, ১৯৭৯ সালে এই কেন্দ্রে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছিল।
গুগল, অ্যামাজন এবং মাইক্রোসফটের মতো সংস্থাগুলি সৌর ও বায়ু বিদ্যুতের মতো পরিবেশ-বান্ধব প্রযুক্তিতেও বিনিয়োগ করছে।
এই পদক্ষেপগুলি একদিকে যেমন কার্বন নিঃসরণ কমাতে সাহায্য করবে, তেমনই বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে সহায়ক হবে।
এই ঘটনা প্রমাণ করে যে, বিশ্বজুড়ে পরমাণু শক্তিকে নির্ভরযোগ্য এবং পরিবেশ-বান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে দেখা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস