ত্বকের র‍্যাশ নিয়ে চিন্তিত? গুগল ব্যবহারের আগে সাবধান হন!

ইন্টারনেটে স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্যের নির্ভরযোগ্যতা: যা জানা জরুরি।

আজকাল সামান্য অসুস্থতা থেকে শুরু করে গুরুতর কোনো রোগের অনুসন্ধানে অনেকেই গুগলের শরণাপন্ন হন। হাতের মুঠোয় তথ্য পাওয়ার এই সহজলভ্যতা নিঃসন্দেহে উপকারী।

কিন্তু ইন্টারনেটে উপলব্ধ স্বাস্থ্য বিষয়ক সব তথ্যের সত্যতা যাচাই করা জরুরি। কারণ, ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে স্ব-চিকিৎসা মারাত্মক হতে পারে।

আসুন, স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য খোঁজার সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জেনে নেওয়া যাক।

প্রথমেই আসে তথ্যের উৎস যাচাইয়ের বিষয়টি। ইন্টারনেটে উপলব্ধ সব তথ্য নির্ভরযোগ্য নাও হতে পারে।

অনেক ওয়েবসাইট নিজেদের প্রচারের জন্য সার্চ রেজাল্টের উপরের দিকে আসে। তাই কোনো তথ্য পড়ার আগে নিশ্চিত করুন সেটি কোনো নামকরা স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া হয়েছে কিনা।

যেমন – বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO), রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (CDC)-এর মতো নির্ভরযোগ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুসরণ করা যেতে পারে। এছাড়াও, অনেক সময় বিভিন্ন স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবসাইটে ভুল বা বিভ্রান্তিকর তথ্যও থাকতে পারে।

তাই তথ্যের উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়াটা খুব জরুরি।

বর্তমানে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বাড়ছে। অনেক ক্ষেত্রে, এআই দ্রুত তথ্য সরবরাহ করতে পারে।

কিন্তু এআই প্রায়ই বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া তথ্য একত্রিত করে, যা সব সময় নির্ভরযোগ্য নাও হতে পারে। অনেক সময় এআই তৈরি করা উত্তরে তথ্যের উৎস উল্লেখ করা হয় না, ফলে এর সত্যতা যাচাই করা কঠিন হয়ে পড়ে।

এমনকি, এআই মাঝে মাঝে ‘হ্যালুসিনেশন’-এর শিকার হতে পারে, অর্থাৎ, এটি এমন তথ্য দিতে পারে যা আসলে ভিত্তিহীন।

তাই এআই থেকে পাওয়া তথ্যের ওপর চোখ বুজে ভরসা করা উচিত নয়।

প্রশ্ন করার ধরনও সঠিক তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি কোনো শারীরিক সমস্যা নিয়ে গুগলে অনুসন্ধান করেন, তবে সরাসরি রোগ নির্ণয়ের চেষ্টা না করে, লক্ষণের ওপর ভিত্তি করে প্রশ্ন করুন।

উদাহরণস্বরূপ, “আমার ত্বকের নিচে চাকা দেখা দিলে এর কারণ কী হতে পারে?” – এমন প্রশ্ন করুন, “আমার ত্বকের নিচের চাকাটি কি ক্যান্সার?” – এই ধরনের প্রশ্ন করা এড়িয়ে চলুন।

কারণ, সরাসরি রোগ নির্ণয়ের চেষ্টা করলে অন্যান্য সম্ভাব্য কারণগুলো আপনার নজর এড়িয়ে যেতে পারে।

গুরুতর অসুস্থতার ক্ষেত্রে অনলাইনে তথ্যের খোঁজাখুঁজি না করে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। যেমন, বুকে ব্যথা, স্ট্রোকের লক্ষণ, অথবা জ্ঞান হারানোর মতো সমস্যা হলে দ্রুত হাসপাতালে যান।

সময় নষ্ট করা কোনোভাবেই ঠিক নয়।

মনে রাখবেন, ইন্টারনেটে পাওয়া তথ্য রোগ নির্ণয়ের জন্য যথেষ্ট নয়। ডাক্তারেরা তাদের প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে রোগের কারণ খুঁজে বের করেন এবং সঠিক চিকিৎসা প্রদান করেন।

সামান্য উপসর্গ যেমন – প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া, অথবা কোনো কারণ ছাড়াই ওজন কমে যাওয়া – মারাত্মক রোগের লক্ষণ হতে পারে। তাই, কোনো শারীরিক সমস্যা হলে দ্রুত একজন ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন।

স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্যের জন্য নির্ভরযোগ্য ওয়েবসাইট এবং ডাক্তারের পরামর্শ দুটোই জরুরি। অনলাইনে উপলব্ধ তথ্যের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি সচেতন হতে পারেন, তবে কোনো অবস্থাতেই এটি চিকিৎসকের বিকল্প হতে পারে না।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *