যুক্তরাজ্যে গুগলের বিরুদ্ধে একটি বিশাল মামলা দায়ের করা হয়েছে, যেখানে তাদের বিরুদ্ধে অনলাইন অনুসন্ধান বাজারে একচেটিয়া ক্ষমতা দেখানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রায় ৫ বিলিয়ন পাউন্ড ক্ষতিপূরণের দাবিতে এই মামলাটি করা হয়েছে, যা বাংলাদেশি টাকায় বিশাল একটি অঙ্ক।
অভিযোগ উঠেছে, গুগল তাদের প্রতিপক্ষদের ইন্টারনেট অনুসন্ধান বাজার থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে এবং ব্যবসার কাছ থেকে বিজ্ঞাপন বাবদ অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে।
মামলার মূল অভিযোগ হলো, গুগল অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে তাদের নিজস্ব সার্চ অ্যাপ্লিকেশন এবং ক্রোম ব্রাউজার আগে থেকেই ইনস্টল করার জন্য প্রস্তুতকারকদের সঙ্গে চুক্তি করে। এছাড়াও, আইফোনে ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে গুগলকে রাখার জন্য তারা অ্যাপলের সঙ্গে অর্থ বিনিময় করেছে।
এর মাধ্যমে গুগলের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল, তাদের প্রতিযোগীদের সঙ্গে বাজারে টিকে থাকতে না দেওয়া। এই মামলাটি দায়ের করেছেন বিশেষজ্ঞ আইনজীবী অর ব্রুক, যিনি হাজার হাজার ব্যবসার পক্ষে এই অভিযোগগুলো এনেছেন।
ব্রুকের মতে, গুগল তাদের নিজস্ব বিজ্ঞাপন প্ল্যাটফর্মের সুবিধার জন্য, তাদের সার্চ ইঞ্জিনের কার্যকারিতা এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট্যগুলো উন্নত করেছে। এর ফলে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে গুগল বিজ্ঞাপন ব্যবহার করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প ছিল না।
বাজারে নিজেদের দৃশ্যমানতা বজায় রাখতে তাদের গুগলের শীর্ষ স্থানগুলো নিশ্চিত করতে হতো, যা তাদের জন্য অপরিহার্য ছিল।
এই মামলার বিষয়ে গুগলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এটি একটি ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা। তারা আরও জানিয়েছে, ব্যবহারকারী এবং বিজ্ঞাপনদাতারা গুগলের পরিষেবা ব্যবহার করে, কারণ এটি তাদের জন্য সহায়ক, কোনো বিকল্প নেই বলে নয়।
বর্তমানে, যুক্তরাজ্যের প্রতিযোগিতা ও বাজার কর্তৃপক্ষ (Competition and Markets Authority – CMA) গুগলের সার্চ পরিষেবাগুলোর ওপর একটি তদন্ত শুরু করেছে। তাদের অনুসন্ধানে বিজ্ঞাপন বাজারের ওপর এর প্রভাবগুলোও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, লক্ষ লক্ষ মানুষ এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুগলের পরিষেবার ওপর নির্ভরশীল। শুধু যুক্তরাজ্যে, দুই লক্ষেরও বেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তাদের বিজ্ঞাপনের জন্য গুগল ব্যবহার করে থাকে, যা মোট অনুসন্ধানের প্রায় ৯০ শতাংশ।
যদিও এই মামলার সরাসরি প্রভাব বাংলাদেশের ওপর এখনো পর্যন্ত দৃশ্যমান নয়, তবে বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তি জায়ান্টদের একচেটিয়া ব্যবসার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আসতেই থাকে। ভবিষ্যতে, এর ফলে বিশ্বজুড়ে অনলাইন ব্যবসার নীতিমালায় পরিবর্তন আসতে পারে, যা বাংলাদেশের বাজারকেও প্রভাবিত করতে পারে।
তথ্য সূত্র: The Guardian