ট্রাম্পের ‘নো কিংস’ সমাবেশ নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য: তোলপাড়!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসন্ন ‘নো কিংস’ সমাবেশ ঘিরে রিপাবলিকান পার্টির (জিওপি) নেতাদের বিতর্কিত মন্তব্যগুলি নতুন করে রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে খবর, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তাঁর মিত্ররা এই সমাবেশগুলোকে ‘আমেরিকার প্রতি ঘৃণা’ পোষণকারী এবং ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে জনমত গঠনের চেষ্টা করছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জিওপি নেতারা আসন্ন সমাবেশের প্রচারের জন্য এমন কৌশল গ্রহণ করেছেন যা অত্যন্ত উদ্বেগের কারণ। এই ধরনের বক্তব্য একদিকে যেমন বিদ্বেষপূর্ণ, তেমনই এর মাধ্যমে ভিন্নমত পোষণকারীদের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

রিপাবলিকান পার্টির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের মধ্যে হাউজ স্পিকার মাইক জনসন সমাবেশগুলোকে ‘ঘৃণা-যুক্ত’ আখ্যা দিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন যে, এই সমাবেশের মূল উদ্যোক্তা ও অংশগ্রহণকারীরা হামাস এবং ‘অ্যান্টিফা’র সমর্থক। এমনকি, রিপাবলিকান দলের নেতা টম এমমার এই সমাবেশকে ‘সন্ত্রাসীদের সমাবেশ’ হিসেবেও উল্লেখ করেছেন।

ক্যানসাসের সিনেটর রজার মার্শাল আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, এই সমাবেশে ‘ভাড়াটে বিক্ষোভকারী’ এবং ‘বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের’ মোকাবিলা করতে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করতে হতে পারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জিওপি নেতাদের এই ধরনের আক্রমণাত্মক মন্তব্য একদিকে যেমন রাজনৈতিক বিভাজনকে আরও গভীর করছে, তেমনই ভিন্নমতের প্রতি অসহিষ্ণুতা তৈরি করছে। তাঁদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসন এর আগেও বামপন্থীদের সম্পর্কে একই ধরনের কঠোর মন্তব্য করেছে।

এমনকি, ডেমোক্রেটদের সম্পর্কেও বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য করতে শোনা গেছে।

অন্যদিকে, ডেমোক্রেট নেতারা জিওপি নেতাদের এই ধরনের মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছেন। ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসাম সহ অনেকে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের ওপর জোর দিয়েছেন। তাঁদের আশঙ্কা, রিপাবলিকানদের এই ধরনের উস্কানিমূলক মন্তব্যের সুযোগ নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন দেশের অভ্যন্তরে সামরিকীকরণের চেষ্টা করতে পারে।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই পরিস্থিতিতে জনগণের মধ্যে বিভাজন আরও বাড়ছে। জনমত জরিপগুলোতে দেখা গেছে, আমেরিকানরা বামপন্থী এবং ডানপন্থী—উভয় ধরনের রাজনৈতিক আদর্শের প্রতিই সমানভাবে সমালোচনামূলক।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আসন্ন ‘নো কিংস’ সমাবেশের ফলস্বরূপ পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে। এই সমাবেশের মাধ্যমে ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি জনগণের মনে ভীতির সঞ্চার করতে পারেন, তবে ভবিষ্যতে তিনি তাঁর ক্ষমতা আরও বাড়াতে পারেন এবং ভিন্ন মতাবলম্বীদের দমন করতে পারেন।

ফলে, যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

তথ্যসূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *