“গোপন চর”: সত্তরের দশকে ব্রাজিলের এক দুঃসাহসিক আখ্যান
সিনেমা ভালোবাসেন এমন দর্শকদের জন্য, কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত ক্লিবার মেন্ডোসা ফিলহো পরিচালিত “গোপন চর” (The Secret Agent) ছবিটি হতে পারে এক নতুন অভিজ্ঞতা।
১৯৭০-এর দশকে ব্রাজিলের স্বৈর regime-এর প্রেক্ষাপটে নির্মিত এই সিনেমা, রাজনৈতিক অস্থিরতা, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং এক ব্যক্তির টিকে থাকার লড়াইয়ের এক উজ্জ্বল চিত্র।
ছবিটির মূল চরিত্র মার্সেলো, যিনি একজন প্রকৌশলী এবং শিক্ষক।
তিনি যখন এক প্রভাবশালী মন্ত্রীর দুর্নীতি ফাঁস করার চেষ্টা করেন, তখন তার জীবন বিপন্ন হয়ে ওঠে।
ক্ষমতাধর ওই মন্ত্রী মার্সেলোকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে উঠেপড়ে লাগেন।
জীবন বাঁচাতে মার্সেলোকে পালিয়ে বাঁচতে হয়, এবং আশ্রয় নিতে হয় একটি গোপন আস্তানায়।
সেখানে তিনি নতুন পরিচয়ে বাঁচতে শুরু করেন।
সিনেমাটিতে মার্সেলোর চরিত্রে অভিনয় করেছেন ওয়াগনার মউরা।
পালিয়ে বেড়ানো এক ব্যক্তির চরিত্রে তার অভিনয় দর্শককে মুগ্ধ করে।
ছবির গল্প এগিয়ে চলে, যেখানে মার্সেলোকে পরিচয়পত্র তৈরির সরকারি বিভাগে কাজ করতে দেখা যায়।
সেই সূত্রে তার সাক্ষাৎ হয় এক দুর্নীতিগ্রস্ত পুলিশ অফিসারের সঙ্গে, যে কিনা শহরের কার্নিভালকে কাজে লাগিয়ে মানুষ হত্যার মতো জঘন্য কাজ করে থাকে।
গল্পের এই পর্যায়ে পরিচালক সমাজের গভীর ক্ষতগুলো উন্মোচন করেন, যা দর্শকদের নাড়া দেয়।
“গোপন চর” শুধু একটি রাজনৈতিক সিনেমা নয়, বরং এটি এক গভীর মানবিক আখ্যান।
সিনেমার দৃশ্যগুলো এতটাই জীবন্ত যে দর্শক ঘটনার সঙ্গে একাত্ম হয়ে যায়।
পরিচালক ফিল্ম নির্মাণের বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করেছেন, যা ছবিটিকে দিয়েছে এক ভিন্ন মাত্রা।
ছবির সিনেম্যাটোগ্রাফি, আবহ সংগীত এবং অভিনয়শৈলী – প্রতিটি বিভাগে রয়েছে মুন্সিয়ানার ছাপ।
ছবিটির নির্মাণশৈলী এবং গল্পের গভীরতা এটিকে অন্যান্য সিনেমা থেকে আলাদা করেছে।
সমালোচকরা ছবিটিকে ইতালীয় পরিচালক আন্তোনিওনির “দ্য প্যাসেঞ্জার”, এবং কোয়েন্টিন টারান্টিনোর সিনেমার সঙ্গে তুলনা করেছেন।
“গোপন চর”-এর গল্পে ব্রাজিলের সেই সময়ের সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে তুলে ধরা হয়েছে, যা দর্শকদের জন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা নিয়ে আসে।
ছবির নির্মাণশৈলী, অভিনয় এবং গল্পের বুনন একে দর্শকের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
এটি একটি শক্তিশালী চলচ্চিত্র, যা দর্শকদের মধ্যে গভীর প্রভাব ফেলতে সক্ষম।
তথ্য সূত্র: The Guardian