ভ্যাপসা গরমে হাঁসফাঁস? এখনই সতর্ক হন, আসল কারণ শুনলে চমকে যাবেন!

যুক্তরাষ্ট্রে তীব্র গরম এবং আর্দ্রতা: জলবায়ু পরিবর্তনের ফল?

যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলে গ্রীষ্মকালে অসহ্য গরম এবং অতিরিক্ত আর্দ্রতা দেখা যাচ্ছে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এই বছর তাপমাত্রার সঙ্গে জলীয় বাষ্পের এই Combination-এর কারণে মানুষের জীবন আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।

জুন ও জুলাই মাসে গত ৪০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আর্দ্রতা রেকর্ড করা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় গরম আরও বেশি অনুভূত হচ্ছে।

Climate Central-এর একজন আবহাওয়াবিদ শেল উইংকলি জানিয়েছেন, জীবাশ্ম জ্বালানির দূষণের কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে গরম বাড়ছে, তার সঙ্গে যোগ হয়েছে অতিরিক্ত আর্দ্রতা। অনেকটা যেন “একসঙ্গে দুটি আঘাত”।

সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলে আর্দ্রতা বেশি থাকে।

কিন্তু এবার মিসিসিপি উপত্যকা থেকে শুরু করে পূর্ব উপকূল পর্যন্ত ২২টি রাজ্যে ১৯৮১ সালের পর থেকে এই সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আর্দ্রতা রেকর্ড করা হয়েছে।

এর কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা সমুদ্রের উষ্ণতাকে দায়ী করছেন।

গ্রীষ্মকালে উপসাগর, ক্যারিবিয়ান এবং আটলান্টিক মহাসাগরের জল অনেক বেশি গরম হয়ে ওঠে, যার ফলে জলীয় বাষ্প বাড়ে।

উষ্ণ বাতাস সমুদ্র থেকে জলীয় বাষ্প শোষণ করে এবং তা বয়ে নিয়ে যায়।

এর ফলে বাতাসের আর্দ্রতা বেড়ে যায়।

গরমের সময় যখন আর্দ্রতা বেশি থাকে, তখন গরম আরও অসহনীয় হয়ে ওঠে।

উদাহরণস্বরূপ, যদি তাপমাত্রা (ফারেনহাইটে) ৭০ ডিগ্রির কাছাকাছি থাকে, তাহলে বাতাস বেশ স্যাঁতসেঁতে এবং অস্বস্তিকর অনুভূত হয়।

তাপমাত্রা যদি ৮০ ডিগ্রির কাছাকাছি যায়, তাহলে তা খুবই বিরক্তিকর হয়ে ওঠে।

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে, যেমন মিসিসিপি ও আলাবামায়, গরমকালে আর্দ্রতা একটি স্বাভাবিক ঘটনা।

কারণ, এ রাজ্যগুলো উষ্ণ ও আর্দ্র উপসাগরের কাছাকাছি অবস্থিত।

কিন্তু গত দুই মাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি খারাপ ছিল।

অনেক জায়গায় তাপমাত্রা ১১০ ডিগ্রি ফারেনহাইট (প্রায় ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস)-এর বেশি ছিল।

আর্দ্রতা বেশি হওয়ার আরেকটি কারণ হলো ভুট্টা।

মধ্য-পশ্চিমের কিছু রাজ্যে প্রচুর ভুট্টা চাষ হয়।

এই ফসলের কারণেও আর্দ্রতা বাড়ে।

তবে এবার শুধু ভুট্টা নয়, অন্য অনেক কারণেও আর্দ্রতা বেড়েছে।

আবহাওয়াবিদ শেল উইংকলি আরও জানিয়েছেন, আটলান্টিক মহাসাগরের ওপর একটি উচ্চ চাপ বলয় (Bermuda High) তৈরি হয়েছে।

গ্রীষ্মকালে এটি পশ্চিমা আটলান্টিকের দিকে সরে আসে এবং ঘূর্ণিঝড় তৈরি করতে সাহায্য করে।

তবে এটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় বাতাসও বয়ে আনে, যার ফলে আর্দ্রতা বাড়ে।

এই অতিরিক্ত আর্দ্রতা মানুষের স্বাস্থ্যর জন্য উদ্বেগের কারণ।

কারণ, আর্দ্রতা বেশি থাকলে শরীর সহজে ঠান্ডা হতে পারে না।

ফলে হিট স্ট্রোকের মতো ঘটনা ঘটার সম্ভবনা বাড়ে।

যাদের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘর নেই, তাদের জন্য এটি আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।

রাতের বেলায় তাপমাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে না, ফলে গরমের কষ্ট আরও বাড়ে।

যুক্তরাষ্ট্রে গরম ও আর্দ্রতার এই পরিস্থিতি জলবায়ু পরিবর্তনের একটি স্পষ্ট উদাহরণ।

এই পরিবর্তনের ফলে বিশ্বের অনেক দেশের মত বাংলাদেশের মানুষের জীবনও কঠিন হয়ে পড়ছে।

তাই, এই ধরনের পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *