স্কুলগুলোতে ত্রাণ নেই! সরকারি অচলাবস্থার বলি ছাত্রছাত্রীরা

যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যাওয়ার (শাটডাউন) কারণে বিদ্যালয়গুলোতে দেখা দিয়েছে অর্থসংকট। এই অচলাবস্থার ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সেই সব বিদ্যালয়, যেগুলো ফেডারেল সরকারের দেওয়া আর্থিক সাহায্যের উপর নির্ভরশীল।

এর ফলস্বরূপ, অনেক বিদ্যালয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ, যা শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনে গুরুতর প্রভাব ফেলছে।

যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা ব্যবস্থা মূলত স্থানীয় করের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। তবে, আদিবাসী আমেরিকান রিজার্ভেশন, সামরিক ঘাঁটি অথবা ফেডারেল কর্তৃপক্ষের অধীনস্থ এলাকাগুলোতে স্থানীয় কর আদায়ের সুযোগ কম থাকে।

এমন পরিস্থিতিতে, বিদ্যালয়গুলো ফেডারেল সরকারের কাছ থেকে পাওয়া আর্থিক সাহায্যের উপর নির্ভর করে। এই সাহায্য ‘ইম্প্যাক্ট এইড’ নামে পরিচিত, যা এই ধরনের বিদ্যালয়গুলোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আরিজোনার চিনলে ইউনিফায়েড স্কুল ডিস্ট্রিক্ট এর একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ। এই জেলার প্রায় অর্ধেক রাজস্ব আসে ‘ইম্প্যাক্ট এইড’ থেকে।

সরকারি অচলাবস্থার কারণে এই সাহায্য বর্তমানে স্থগিত রয়েছে, যার ফলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জরুরি ভিত্তিতে কিছু কর্মসূচি বাতিল করতে হয়েছে। এমনকি, শিক্ষার্থীদের দুপুরের খাবারের ব্যবস্থাও বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, অচলাবস্থা দীর্ঘায়িত হলে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন দেওয়াও কঠিন হয়ে পড়বে।

শুধু চিনলে নয়, দেশটির প্রায় ১,০০০টি বিদ্যালয় এই আর্থিক সংকটের শিকার। এই বিদ্যালয়গুলোতে প্রায় ৮০ লক্ষ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে।

এই পরিস্থিতিতে অনেক বিদ্যালয় তাদের সঞ্চিত অর্থ ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছে, আবার কেউ কেউ ঋণ নেওয়ার কথা ভাবছে।

তবে, এই সংকট মোকাবিলায় কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ফেডারেল আদালতের হস্তক্ষেপ এবং কংগ্রেসের কিছু সদস্যের চাপ।

আদালত প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে, জরুরি পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের জন্য খাদ্য সহায়তা অব্যাহত রাখতে বিকল্প তহবিল ব্যবহারের জন্য।

শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারি অচলাবস্থা অব্যাহত থাকলে বিদ্যালয়গুলোর স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হবে এবং এর সরাসরি প্রভাব পড়বে শিক্ষার্থীদের উপর।

তারা দ্রুত এই সমস্যার সমাধানে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *