শুনলে চমকে উঠবেন! সরকারি কর্মীদের বেতন বন্ধ, আর…

যুক্তরাষ্ট্রের সরকারে অচলাবস্থা: বেতন বন্ধ, বিপাকে সরকারি কর্মচারী।

যুক্তরাষ্ট্রে ফেডারেল সরকারের কার্যক্রম আংশিকভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশটির সরকারি কর্মচারীদের একাংশ বেতন পাচ্ছেন না। এর ফলে চরম আর্থিক সংকটে পড়েছেন তারা। এই অচলাবস্থা ১ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে, যা এখনো চলছে। এর প্রধান কারণ হলো ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের মধ্যে ফেডারেল এজেন্সির অর্থ বরাদ্দ নিয়ে মতবিরোধ।

বর্তমানে, সরকারি কাজকর্ম সচল রাখতে প্রয়োজনীয় তহবিল বিতরণের জন্য কংগ্রেসের উভয় দল এখনো পর্যন্ত কোনো সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি। এর ফলে প্রায় ১০ লক্ষাধিক সরকারি কর্মচারী বেতন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এদের মধ্যে ৭ লাখ ৩০ হাজারের বেশি কর্মচারী কোনো বেতন ছাড়াই কাজ করছেন, আর প্রায় ৬ লাখ ৭০ হাজার কর্মীকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।

এই অচলাবস্থার কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সরকারি কর্মীরা। অনেক কর্মচারী তাদের পরিবারকে ভরণপোষণ করা এবং বাড়ি-গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণে হিমশিম খাচ্ছেন। অনেকের এমন অবস্থা হয়েছে যে, তারা তাদের বাড়ি বা গাড়ি হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছেন। অনেক ফেডারেল কর্মচারী তাদের দুর্দশার কথা জানিয়ে সিএনএনকে চিঠি লিখেছেন।

অন্যদিকে, এই অচলাবস্থার মধ্যেও কিছু সরকারি কর্মচারী নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন আইনপ্রণেতা, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ও ফেডারেল বিচারকগণ। এছাড়া, যারা আগে থেকেই অন্য কোনো তহবিল থেকে বেতন পান, যেমন – ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল অ্যাক্ট’ অথবা ‘ইনফ্লেশন রিডাকশন অ্যাক্ট’-এর মাধ্যমে যাদের বেতন আসে, তারাও নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন। এর বাইরে, সামরিক বাহিনীর প্রায় সকল সদস্যও তাদের বেতন পাচ্ছেন। তবে, এই অচলাবস্থা বেশি দিন চললে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের বেতন পাওয়া নিয়েও শঙ্কা দেখা দিতে পারে।

সরকারের এই অচলাবস্থার কারণে কিছু গুরুত্বপূর্ণ খাতে কর্মরত কর্মীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। উদাহরণস্বরূপ, বিচার বিভাগের কর্মীরা এবং অভ্যন্তরীণ রাজস্ব বিভাগের (আইআরএস) কর্মীরাও এর শিকার হয়েছেন।

ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, সরকারের অচলাবস্থা সাধারণত শেষ হওয়ার পরে ক্ষতিগ্রস্ত কর্মীদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হতো। তবে, ২০১৯ সালে কংগ্রেস একটি আইন করে, যার মাধ্যমে এই বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। কিন্তু বর্তমানে হোয়াইট হাউস বাজেট অফিস বলছে, তারা এই আইনের নতুন ব্যাখ্যা বিবেচনা করছে, যার ফলে ছুটিতে পাঠানো কর্মীদের বকেয়া পাওনা নাও থাকতে পারে।

আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া ছাড়াও, এই অচলাবস্থা যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনিক কার্যক্রমেও ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। ফেডারেল সরকারের কাজকর্ম স্বাভাবিকভাবে সম্পন্ন করা কঠিন হয়ে পড়েছে, যা জনগণের সুযোগ-সুবিধা এবং দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *