উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলের ঘোষণার দিনে মায়ের সঙ্গে এক তরুণীর মনোমালিন্য, যা সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সম্প্রতি, ১৮ বছর বয়সী এক তরুণীর নখ পালিশ না করার সিদ্ধান্তে মা ‘স্বার্থপর’ তকমা দেওয়ায় তাদের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ হয়।
বিষয়টি নিয়ে মেয়েটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাহায্য চেয়েছেন, যেখানে অনেকেই মায়ের এই আচরণকে ভুল হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
ঘটনার সূত্রপাত হয় ওই তরুণীর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের দিনকে কেন্দ্র করে। মেয়েটি জানান, তিনি সেদিন পায়ের নখে পালিশ করতে চাননি, যদিও তিনি হিল জুতো পরবেন।
তার বদলে নখগুলো শুধু কেটে স্বাভাবিক রাখতে চেয়েছিলেন। এতেই মায়ের আপত্তি। মা তাকে স্বার্থপর আখ্যা দিয়ে বলেন, “নিজের দিকে তাকানোর বাইরে তিনি আর কিছুই করেন না।”
মা আরও বলেন, “কেবল বয়স্করাই বয়স্কদের কথা শোনে।” এমনকী তিনি মেয়ের ছোট বোনের সঙ্গেও তুলনা করেন।
মেয়েটি তার পোস্টে আরও উল্লেখ করেন, সম্ভবত নখ পালিশ আসল বিষয় ছিল না। হয়তো মা তার সঙ্গে সময় কাটাতে অথবা এই বিশেষ মুহূর্তে তাঁর অংশীদার হতে চেয়েছিলেন, যা তারা ভালোভাবে আলোচনা করতে পারতেন।
বিষয়টি নিয়ে পরবর্তীতে সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা হয়। অনেকেই এই ঘটনায় মেয়েটির পাশে দাঁড়িয়েছেন।
তাদের মতে, মায়ের এই ধরনের আচরণ সম্ভবত পুরোনো ধ্যানধারণা থেকে এসেছে, যেখানে একজন নারীর সাজসজ্জা কেমন হবে, সে বিষয়ে কিছু গোঁড়া ধারণা কাজ করে।
কেউ কেউ মনে করেন, বিষয়টি আসলে মেয়ের ‘না’ বলার স্বাধীনতাকে কেন্দ্র করে, যেখানে মা তার উপর নিজের মতামত চাপিয়ে দিতে চাইছেন। তাদের মতে, মায়ের এই ধরনের আবেগপূর্ণ যুক্তির কোনো ভিত্তি নেই, কারণ এর মূল উদ্দেশ্য হল মেয়েকে নিজের ইচ্ছানুযায়ী কাজ করতে বাধ্য করা।
এই ঘটনার মাধ্যমে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সামনে আসে। তা হলো, তরুণ প্রজন্মের নিজস্ব পছন্দ এবং পরিবারের প্রত্যাশার মধ্যেকার দ্বন্দ্ব। বিশেষ করে আমাদের সমাজে, যেখানে পরিবারের সম্মান এবং তরুণ প্রজন্মের সাজসজ্জা নিয়ে অনেক বেশি প্রত্যাশা থাকে, সেখানে এই ধরনের ঘটনা নতুন করে আলোচনার জন্ম দেয়।
অনেকে মনে করেন, মেয়েটির এই সিদ্ধান্ত একান্তই তার ব্যক্তিগত বিষয়, যেখানে মায়ের প্রতিক্রিয়া ছিল অপ্রত্যাশিত।
তবে, এই ঘটনার অন্য একটি দিকও রয়েছে। হয়তো মা তার মেয়ের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি দিনে তার সঙ্গে থাকতে চেয়েছিলে, যা ভালোভাবে বুঝিয়ে বলা যেত। সবশেষে, এই ঘটনা পারিবারিক সম্পর্ক এবং তরুণ প্রজন্মের স্বাধীনতা নিয়ে নতুন করে ভাবার অবকাশ তৈরি করে।
তথ্য সূত্র: পিপল