মায়ামির বাসিন্দা এক তরুণী, ন্যাপলা চুয়ারেই, তার দাদা-দাদীর জন্য এমন একটি কাজ করেছেন যা এখন অনেকের কাছেই অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। পরিবারের প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি।
ঘটনাটি হলো, তিনি তার দাদা-দাদী, বার্বারা পোলো (৭০) এবং অক্টাভিও ক্রুজ (৭৩)-এর বাথরুমটি সম্পূর্ণ নতুন করে সাজিয়েছেন, যখন তারা দুই সপ্তাহের জন্য কিউবায় তাদের পুরনো বাড়ি বিক্রি করতে গিয়েছিলেন।
ন্যাপলার এই উদ্যোগের পেছনে ছিল গভীর ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা। কিউবা থেকে আসা তার দাদা-দাদী তাদের পরিবারের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন।
তাদের প্রতি সম্মান জানাতেই এই বাথরুম সংস্কারের পরিকল্পনা করেন ন্যাপলা। তিনি জানান, “আমি চেয়েছিলাম তাদের বিশেষ কিছু উপহার দিতে, যা তাদের প্রতি আমাদের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ হবে।”
দাদা-দাদী তাদের পুরনো, ভাঙাচোরা বাথরুমটি নিয়ে তেমন একটা অভিযোগ করতেন না, বরং তাদের কোনো নতুন কিছুর চাহিদাও ছিল না। তবে ন্যাপলা জানতেন, তাদের ভালো একটি বাথরুমের প্রয়োজন।
তাই সুযোগ বুঝে, এপ্রিলের শুরুতে যখন তারা কিউবায় যান, ন্যাপলা কাজে নেমে পড়েন।
বাথরুম সংস্কারের কাজটি মোটেও সহজ ছিল না। বাথরুমের টাইলস পরিবর্তন করা, পুরনো পাইপ সারানো এবং নতুন ফিটিংস বসানো—সবকিছুই ছিল সময়সাপেক্ষ।
ন্যাপলার স্বামী এবং আরও কয়েকজন মিস্ত্রি ও হেল্পারের সহায়তায় কাজটি সম্পন্ন হয়। তার মা নিয়মিত ঘর পরিষ্কারের কাজটি করেছেন, যেন কাজ চলাকালীন কোনো অসুবিধা না হয়।
ন্যাপলা বলেন, “মনে হচ্ছিল যেন আমরা একটি রিয়েলিটি শো করছি, যেখানে সবাই মিলে কাজ করছি।”
প্রায় ১০,০০০ ডলার (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১১ লাখ) খরচ করে বাথরুমটি সাজানো হয়। বাথরুমটি সংস্কার করতে গিয়ে অনেক রাত পর্যন্ত কাজ করতে হয়েছে তাদের।
ন্যাপলার ভাষায়, “কাজের চাপ ছিল, তবে দাদা-দাদীর মুখে হাসি ফোটানোর চিন্তাটাই আমাদের সাহস জুগিয়েছে।”
সংস্কারের পর যখন দাদা-দাদী ফিরে আসেন, তাদের বিস্মিত হওয়ার পালা। ন্যাপলা জানান, প্রথমে তার দিদিমা ভেবেছিলেন, তারা হয়তো শুধু বাথরুমটি নতুন করে সাজিয়েছেন।
কিন্তু ভালো করে দেখে তিনি যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না! তার দাদা তো দুই সপ্তাহের মধ্যে এত সুন্দর কাজ দেখে অবাক হয়ে যান।
নতুন বাথরুমে তাদের হাসি দেখে ন্যাপলা ও তার পরিবারের সবাই অত্যন্ত খুশি হন।
তবে, অনলাইনে অনেকে বাথরুমের ডিজাইন নিয়ে কিছু প্রশ্ন তুলেছিলেন। বিশেষ করে বয়স্কদের সুবিধার জন্য নিরাপত্তা বার না থাকায় অনেকে সমালোচনা করেন।
ন্যাপলা জানান, “আসলে, আমার দাদা-দাদী ওই বারগুলো একদম পছন্দ করতেন না। তারা ওগুলো বাথরুম থেকে हटाতে চেয়েছিলেন। তাই তাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখেই আমরা বাথরুমটি সাজিয়েছি।”
এই ঘটনার মাধ্যমে ন্যাপলা প্রমাণ করেছেন, পরিবারের প্রতি ভালোবাসা থাকলে, যেকোনো কিছুই করা সম্ভব।
তথ্য সূত্র: পিপল