গ্রিসের একটি সুন্দর দ্বীপ, আন্দ্রোসে পায়ে হেঁটে ভ্রমণের এক দারুণ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এই দ্বীপের পুরনো পথগুলো পুনরুদ্ধারের এক মহৎ উদ্যোগে সামিল হয়েছেন স্থানীয় কিছু মানুষ, যা এখন পর্যটকদের কাছেও অত্যন্ত আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে।
যাদের প্রকৃতিপ্রেম আর পায়ে হেঁটে ঘোরার আগ্রহ আছে, তাদের জন্য এই দ্বীপ যেন এক স্বর্গরাজ্য।
আন্দ্রোসের এই পথগুলোর ইতিহাস প্রায় এক হাজার বছরের পুরনো। একসময় এই পথগুলি দ্বীপের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম ছিল।
এখন, “আন্দ্রোস রুটস” নামক একটি স্থানীয় সংগঠন এই পথগুলির সংস্কার করে সেগুলোকে পায়ে হাঁটা পথের উপযোগী করে তুলেছে। এই কাজে তারা স্বেচ্ছাসেবকদের সাহায্য নেয়, যারা “এঞ্জেল” নামে পরিচিত।
এই এঞ্জেলরা পথের নির্দিষ্ট অংশের দেখাশোনা করেন এবং কোনো সমস্যা হলে তা সমাধানে এগিয়ে আসেন।
এই হাঁটা পথের ভ্রমণের মূল আকর্ষণ হলো, একদিকে যেমন প্রকৃতির অপরূপ শোভা উপভোগ করা যায়, তেমনই স্থানীয় সংস্কৃতির সঙ্গেও পরিচিত হওয়া যায়।
পর্যটকেরা এখানকার মনোরম পরিবেশে হেঁটে বেড়ানোর পাশাপাশি স্থানীয় গ্রামগুলোতে বসবাস করা মানুষের জীবনযাত্রা সম্পর্কে জানতে পারেন।
পুরাতন জলধারা, স্থানীয় চার্চ, এমনকি এক সময়ের জলকলও এই পথের ধারে দেখা যায়।
ভ্রমণের সময় পর্যটকদের জন্য স্থানীয় খাবার এবং হস্তশিল্প উপভোগ করারও সুযোগ রয়েছে।
দ্বীপের স্থানীয় কারিগরদের তৈরি করা পনির, জ্যাম, মধু ইত্যাদি কিনে তারা স্থানীয় অর্থনীতিকে সাহায্য করতে পারেন।
এখানকার “আন্দ্রেস রিসার্চ সেন্টার” একটি ইন্টারেক্টিভ মানচিত্র তৈরি করেছে, যা পর্যটকদের স্থানীয় শিল্পী ও খাদ্য প্রস্তুতকারকদের খুঁজে পেতে সাহায্য করে।
এই ভ্রমণে অংশগ্রহণকারীরা ইচ্ছে করলে পথের রক্ষণাবেক্ষণের কাজেও সহায়তা করতে পারেন।
স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে ঝোপঝাড় পরিষ্কার করা, পথের ধারে পাথর সরানো, এমনকি সাইনবোর্ড মেরামতের মতো কাজও করা যায়।
এই ভ্রমণের পরিকল্পনা করেছেন “র্যাম্বল ওয়ার্ল্ডওয়াইড” নামক একটি সংস্থা।
তাদের আট দিনের এই ভ্রমণে থাকার ব্যবস্থা, দ্বীপের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যাওয়ার ব্যবস্থা, এমনকি লাগেজ স্থানান্তরের সুবিধাও রয়েছে।
সাধারণত মার্চ থেকে মে মাস এবং সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাসের মধ্যে এখানকার আবহাওয়া হাঁটার জন্য বেশ উপযুক্ত থাকে।
এই ভ্রমণের ফলে একদিকে যেমন পর্যটকদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা তৈরি হচ্ছে, তেমনই স্থানীয় অর্থনীতিও চাঙা হচ্ছে।
পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ার কারণে এখানকার পুরনো বাড়িগুলো সংস্কার করা হচ্ছে এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও উপকৃত হচ্ছেন।
যারা প্রকৃতির কাছাকাছি থাকতে ভালোবাসেন এবং নতুন কিছু করতে চান, তাদের জন্য আন্দ্রোসের এই পায়ে হাঁটা পথগুলো হতে পারে এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান