গ্রিসের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের একটি লুকানো রত্ন হলো জাগোরি। সবুজ পাহাড় আর পাথুরে গ্রামগুলির মাঝে লুকিয়ে আছে এক অসাধারণ সৌন্দর্যের ভান্ডার। এখানকার গভীর গিরিখাত, পাথরের তৈরি পুরোনো সেতু আর স্থানীয় মানুষের উষ্ণ আতিথেয়তা – সব মিলিয়ে জাগোরি যেন প্রকৃতির এক অপার বিস্ময়।
সম্প্রতি, কোভিড-১৯ মহামারীর পর থেকে এখানে হাইকিংয়ের জনপ্রিয়তা বাড়ছে, যদিও গ্রিকদের মধ্যে এটি এখনো খুব পরিচিত নয়।
জাগোরির প্রধান আকর্ষণ হলো ভিকোস গিরিখাত। এর গভীরতা বিশ্বে অন্যতম। পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসা সরু পথ ধরে হেঁটে গেলে দেখা মেলে স্বচ্ছ নীল ভয়েডোমাটিস নদীর।
সবুজ বনভূমি আর পাথুরে পাহাড়ের মাঝে এই নদীপথ যেন এক অন্য জগৎ। এখানকার গ্রামগুলোও যেন প্রকৃতির সাথে মিশে গেছে। পাথরের তৈরি বাড়িগুলো এখানকার পরিবেশের সাথে এমনভাবে মিলে যায় যে, তাদের আলাদা করা কঠিন।
জাগোরির গ্রামগুলির মধ্যে মোনডেনরি অন্যতম। এখান থেকে ভিকোস গিরিখাতের দৃশ্য অসাধারণ। এখানকার স্থানীয়রা তাদের ঐতিহ্য আর সংস্কৃতিকে আজও ধরে রেখেছে।
পর্যটকদের জন্য এখানকার মানুষদের আন্তরিকতা সত্যিই মুগ্ধ করার মতো। তাদের সরল জীবনযাত্রা, অতিথি পরায়ণতা যে কারো মন জয় করে নেয়।
ভিকোস গিরিখাতে হাইকিং করার সময় স্থানীয় আনা ডায়াম্যান্টোপুলুর মতো গাইডদের দেখা পাওয়া যায়। তারা হাইকিংয়ের প্রাথমিক বিষয়গুলো শিখিয়ে থাকেন এবং এই অঞ্চলের ইতিহাস ও সংস্কৃতি সম্পর্কে অবগত করেন।
এছাড়াও, এখানকার পাথুরে পথ ধরে হেঁটে আপনি পৌঁছে যেতে পারেন পাপিংগো গ্রামগুলোতে। এখানকার পুরনো পাথরের সেতুগুলো এই অঞ্চলের ঐতিহ্য বহন করে।
এখানে আসলে আপনি স্থানীয় খাবার চেখে দেখতে ভুলবেন না। স্পানাকোপিটা, যা পালং শাক ও পনির দিয়ে তৈরি একটি সুস্বাদু খাবার, এখানকার একটি বিশেষত্ব।
এছাড়াও, এখানকার শক্তিশালী একটি পানীয় হলো “সিস্টপ্রো” (Tsipouro)। এটি গ্রিক সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ।
জাগোরি ভ্রমণের অভিজ্ঞতা শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি স্থানীয় সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হওয়ারও সুযোগ করে দেয়। এখানকার মানুষের আন্তরিকতা, আতিথেয়তা এবং প্রকৃতির প্রতি তাদের ভালোবাসাই জাগোরিকে বিশেষ করে তোলে।
আপনি যদি প্রকৃতির নীরবতা ভালোবাসেন, তাহলে জাগোরি হতে পারে আপনার জন্য একটি আদর্শ গন্তব্য।
তথ্য সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক
